মানুষ যা ভাবে, অনেক ক্ষেত্রে তার উল্টাটাই ঘটে, আবার মাঝে মাঝে তাও ঘটে যাঁদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন। আমি ঋত্বিককে বুঝাতে লাগলাম বিভিন্ন দৃষ্টান্ত দিয়ে। অবশেষে বললাম, অর্ক আসলে একটা বোকা। এমন হীরের টুকরো কেউ পায়ে ঠেলে। তোকে পাওয়া যেকোনো সমপ্রেমি মানুষের জন্য পরম ভাগ্যের। ও মনে হয় তোকে ভালোবাসতো না?
-ভালো না বাসলে এভাবে অনুভূতি প্রকাশ করা যায় না। আমি যুক্তি দিয়ে চলি, আমার সকল যুক্তি প্রমাণ করেছিল ও আমাকে ভালোবাসে।
–তার পরম দুর্ভাগ্য। সে এমন একজনকে হারাল যে তাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসতো। আর তুই এদিক থেকে সৌভাগ্যবান তুই এমন একজনকে হারালি যে তোকে ভালবাসেনি, শুধু তোর সুন্দর দেহটা নিয়ে খেলেছে। তুই বেঁচে গেলি রে !
-তোর এই কথাটা ভীষণ ভালো লাগলো।সত্যি ও জানলো না যে সে কি হারাল।
এবার ওর মুখে একটু হাসি ফুটে উঠলো। দুজন কিছুক্ষণ হেসে ওকে কিছুটা সহজ করে দিলাম। বললাম, জীবন কেটে যাবে। কারো জন্য কারো কিছু থেমে থাকবে না। আমি জানি, শেষ হাসি তুই হাসবি। তোর আত্মবিশ্বাস নিয়ে তুই অটল থাক। অর্ক তোর ভালোবাসার কাছে ঠিকই ফিরে আসবে।তার সকল পথ যখন বন্ধ হয়ে যাবে,তখন তোর কাছে আসা ছাড়া ওর কোনও বিকল্প থাকবে না। খেলাটা তখন তুই খেলবি।
ঋত্বিক শুধু একটা কথাই বলল, তোর কথা যদি সত্যি হয়, তবে আমি পুরোপুরি আস্তিক হয়ে যাব, আর কোনদিন নাস্তিক্যবাদ প্রচার করবো না।
ওইদিনের কথাবার্তা ওখানেই শেষ হয়। রুমে ফিরে ঋত্বিক আকাশ-পাতাল অনেক কিছু ভাবতে লাগলো। যদি এমন হয়, অর্কর বন্ধুটা অন্য কারো সাথে চলে গেছে, তখন অর্ক ঠিকই তার কাছেই ফিরে আসবে। সে মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে, যাই ঘটুক না কেন, সে অর্কের জন্য অপেক্ষা করবে। অর্ক ছাড়া কারো কাছে গিয়ে সে শান্তি পাবে না। অর্কের প্রতি তার সীমাহীন নির্ভরতার অনেক যুক্তি আছে। একটা একটা যুক্তি সে বিশ্লেষণ করে দেখল। অর্ক হয়তো তাকে দেয়া কথা ভুলে যেতে পারে, কিন্তু সে ভুলবেনা। ভুলে যাওয়া মানে তার পরাজয়। সে কিছুতেই হারতে পারে না। প্রচণ্ড এক জিদ ভর করলো তার দেহ-মনে। জীবন নিয়ে খেলার সিদ্ধান্ত তখনি নিয়ে ফেললো সে। তারপরই ভাবল, অর্ককে একটি মেইল করলে কেমন হয়? যা ভাবা তা করা। মেইলে লিখতে লাগলো সে -
প্রিয়,
তোমার বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। তোমার প্রতি অভিমানও নেই, এমনকি তোমার কাছে চাওয়া-পাওয়াও নেই । শুধু এক বুক ভালোবাসা আছে। এই ভালোবাসা শত অপমানে, অসন্মানেও অটল। এই ভালোবাসায় কোনও নোংরামি বা অস্বচ্ছতা নেই। এই ভালোবাসা ভালোবাসার বিনিময়ে ভালবাসাও আশা করে না। শুধু তোমার কাছে থাকার, তোমার সকল প্রয়োজনে সাড়া দেবার, তোমাকে খুশি রাখার এক অনন্ত আকুলতা এ হৃদয়ের গভিরে প্রোথিত।
আমি যতটুকু জানি, তুমি ভুল করে আমার কাছে চলে এসেছ। তোমার ভুলটাই আমার জীবনের চরম সত্য। আমার সত্য নিয়ে আমি সারা জীবন বেঁচে থাকতে পারবো। কারণ, এই সত্যের পেছনে আমি আজীবন ছুটেছি। যেহেতু সত্য আমার জীবনে আলো হয়ে এসেছে, এই আলোই আমার জীবন পথের প্রেরণা হয়ে আমাকে শান্তির পারাবারে নিয়ে যাবে। আমি অনন্ত শান্তির বারিধারা পান করার জন্য আমার জীবনের বাকি দিনগুলো পার করে দিতে পারবো।
দুজন পথিক কথা বলতে বলতে যাচ্ছে, তাঁদের কথা শুনল পাশে দিয়ে যাওয়া এক পথচারী। এই পথচারী ওই দুই ব্যক্তির একজনের একটা কথা হৃদয়ে নিয়ে জীবন পার করে দিল, আর যারা কথা বলছিল তারা তা হয়তো ওইসময়ই ভুলে গিয়েছিলো। আমি সেই পথচারী যে তোমার কথা আমৃত্যু মনে রাখবে। কারণ, আমাকে তুমি যা দিয়েছ, তা পৃথিবীর কোনও মানুষ আমাকে দিতে পারে নাই, পারবেও না। আমি তা চাইও না। জীবনের অনেক সময় কেটে গেলো তোমার দেখা পেতে পেতে, বাকিটা কেটে যাবে তোমার তপস্যা করতে করতে। তোমার ধ্যান ভাঙুক, অথবা না ভাঙুক – আমি আমার সাধনা চালিয়ে যাব। আমি জানি, সাধনায় সিদ্ধি লাভ হয়।
তুমি হয়তো ভাবতে পার আমি আবেগপ্রবণ। মোটেই কিন্তু তা নয়। আবেগ খুবই ক্ষণিকের এক অনুভূতি যার স্থায়িত্ব অল্প সময়। আমার জীবনের আগা–গোঁড়া মনের মানুষের ধ্যানে কেটেছে যা কোনওভাবে আবেগ নয়, এটা নিরন্তর বাস্তবতা। আর সেই মনের মানুষ হয়ে তুমিই এলে আমার জীবনে।তোমার সাথে কাটানো দিনগুলো আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন, সেই স্বপ্নের দিনগুলো বুকে নিয়ে আমার পক্ষে বাকি জীবন পার করে দেয়া সম্ভব।
আমার ভালোবাসা কি একতরফা ছিল? না, এটার ফুরসত তুমি আমাকে দাওনি। তোমার প্রবল জোয়ারে আমার দুকুল যখন একটু একটু করে ভাঙছিল, আমিতো সেই ভাঙনে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছি। আমি চেয়েছিলাম আরও ভাঙতে। কিন্তু তুমি হঠাৎ জোয়ার বন্ধ করে দিলে। একি আমার অপরাধে, নাকি তোমার সকল অভিপ্রায় পূরণ হয়ে যাবার কারণে? এখানেও আমার কোনও অভিযোগ নেই। আমি তোমার বিরুদ্ধে কোনও জিঘাংসা পোষণ করি না, কৈফিয়তের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতেও চাই না। কারণ, তোমার কোনও অপমান আমার নিজেরি অপমান। তোমাকে অশ্রদ্ধা করবো – এমন কথা আমি কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি।
জান, প্রতি রাতের মতো কাল রাতেও তুমি আমার স্বপ্নে এসেছিলে। আমার স্বপ্নপুরুষ আমাকে নিয়ে কত রকমের খেলা খেলেছে, আমাকে সুখ সাগরে ভাসিয়েছে। হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখি, এটা আমার স্বপ্ন। মানুষ দিনে যা ভাবে, তা নাকি রাতে ঘুমের মাঝে আসে। কে জানে? নিজেকে বেশি প্রশ্ন করতে আজকাল ভয় লাগে। চলে যাক না দিন!
তুমি হয়তো ভাবতে পার, আমি তোমার শরীরকে ভালবেসেছি। নিজেকে বারবার প্রশ্ন করেও আমি এর উত্তর পাই নি। শরীরের প্রতি আমার তেমন মোহ নেই, আমি শুধু তোমার ডাকে সাড়া দিয়ে তোমার স্পর্শে অদ্ভুত ভাললাগায় কেঁপেছি, তোমার কঠিন আলিঙ্গনে চরমভাবে শিহরিত হয়েছি, তোমার সকল ইচ্ছেগুলোকে পূরণ করে দিয়েছি। কারণ তোমার ইচ্ছেকে না করবো, এতবড় দুঃসাহস আমার ছিল না। তুমি যখনি আমাকে বউ বলে ডেকেছ, আমার সমস্ত অন্তরাত্মা অন্যরকম এক ভাললাগার অনুভূতিতে ছেয়ে যেত।
এই দিনগুলো বুকে নিয়ে আমি বাঁচতে চাই।তুমি দূরে থাকো অথবা কাছে থাকো – আমার কাছে সবই সমান। আমি জানি, আমার সারা সকাল-দুপুর-বিকা ল-সন্ধা-রাত, সকল বেলায় কেবল তোমারি উপস্থিতি।
‘তুমি সুখ যদি নাহি পাও, যাও সুখেরও সন্ধানে যাও
আমি তোমারে পেয়েছি হৃদয়ও মাঝে , আরও কিছু নাহি চাই গো’
তোমার চিরদিনের সঙ্গী
ঋত্বিক
মেইলটা পাঠিয়ে ক্লান্ত শরীরে সে ঘুমিয়ে পড়ল। ঘুমের মাঝে সে স্বপ্ন দেখল, অর্ক এসে ডাকছে, আলিঙ্গন করছে।বলছে, বউ, তোমাকে ছেড়ে আমি থাকতে পারছি না। তাই তোমাকে নিয়ে যেতে এসেছি। আমি তো কেবল তোমাকে পরীক্ষা করছিলাম। তুমি পাস করেছো। আমি শুধু তোমাকে ভালবাসি।চুম্বনে চুম্বনে সিক্ত করে তুলছে তার সমস্ত শরীর। হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখল, তার সমস্ত শরীর ঘামে চুপচুপে। বিছানা ছেড়ে উঠে বাথরুমে গিয়ে চোখে মুখে জল দিয়ে একটু ফ্রেস হয়ে সে ছাদে গেলো। আকাশের তারাগুলোকে আজ খুব অসহায় মনে হচ্ছে। অথচ একদিন কত পরিপূর্ণই না ছিল এই আকাশ। অর্কের বুকে মাথা রেখে কত পূর্ণিমার রাত কত জায়গায় কাটিয়েছে। ভাবতেই চোখে জল এসে গেলো।
একরকম নিরানন্দেই কেটে যাচ্ছিল ঋত্বিকের দিন। চেষ্টা করছি ওকে সঙ্গ দেবার। কিন্তু মনমরা ভাবটা সে কোনোভাবেই কাটিয়ে উঠতে পারছিল না। এর মধ্যেই একদিন দেখি, সে খুব স্বাভাবিক। আবার আগের মতো হাসিখুশি,প্রাণচ ঞ্চল। কারণ জিজ্ঞেস করতেই বলল – আজ সকালে অর্ক এসেছিল। সারাদিন একসাথে ঘুরেছি। বললাম, কীভাবে এটা হল?
সে বলল, তার ওই বন্ধুটা ভিতরে ভিতরে নাকি বহুগামি ছিল। সে যখন অফিসে থাকতো, তখন অন্য লোককে তার বাসায় নিয়ে আসতো। সেদিন কি কারণে সে খবর না দিয়ে বাসায় এসে দেখে, তার বন্ধুটি অন্য লোক নিয়ে ফুর্তি করছে।
ওই ঘটনা নাকি তার চোখ খুলে দিয়েছিলো। কয়েকদিন নিজের সাথে বোঝাপড়া করে অবশেষে আমার কাছেই ছুটে আসলো।
বললাম, তাহলে এখন থেকে তুই আর নাস্তিক নস?
সে বলল, অর্ক যতদিন আমার সাথে থাকবে ততদিন আস্তিক থাকবো।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
গল্পটি প্রথমে ফেসবুকে প্রকাশিত হয়। ফেসবুকে পাঠক মন্তব্যের কিছু অংশঃ
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
-ভালো না বাসলে এভাবে অনুভূতি প্রকাশ করা যায় না। আমি যুক্তি দিয়ে চলি, আমার সকল যুক্তি প্রমাণ করেছিল ও আমাকে ভালোবাসে।
–তার পরম দুর্ভাগ্য। সে এমন একজনকে হারাল যে তাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসতো। আর তুই এদিক থেকে সৌভাগ্যবান তুই এমন একজনকে হারালি যে তোকে ভালবাসেনি, শুধু তোর সুন্দর দেহটা নিয়ে খেলেছে। তুই বেঁচে গেলি রে !
-তোর এই কথাটা ভীষণ ভালো লাগলো।সত্যি ও জানলো না যে সে কি হারাল।
এবার ওর মুখে একটু হাসি ফুটে উঠলো। দুজন কিছুক্ষণ হেসে ওকে কিছুটা সহজ করে দিলাম। বললাম, জীবন কেটে যাবে। কারো জন্য কারো কিছু থেমে থাকবে না। আমি জানি, শেষ হাসি তুই হাসবি। তোর আত্মবিশ্বাস নিয়ে তুই অটল থাক। অর্ক তোর ভালোবাসার কাছে ঠিকই ফিরে আসবে।তার সকল পথ যখন বন্ধ হয়ে যাবে,তখন তোর কাছে আসা ছাড়া ওর কোনও বিকল্প থাকবে না। খেলাটা তখন তুই খেলবি।
ঋত্বিক শুধু একটা কথাই বলল, তোর কথা যদি সত্যি হয়, তবে আমি পুরোপুরি আস্তিক হয়ে যাব, আর কোনদিন নাস্তিক্যবাদ প্রচার করবো না।
ওইদিনের কথাবার্তা ওখানেই শেষ হয়। রুমে ফিরে ঋত্বিক আকাশ-পাতাল অনেক কিছু ভাবতে লাগলো। যদি এমন হয়, অর্কর বন্ধুটা অন্য কারো সাথে চলে গেছে, তখন অর্ক ঠিকই তার কাছেই ফিরে আসবে। সে মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে, যাই ঘটুক না কেন, সে অর্কের জন্য অপেক্ষা করবে। অর্ক ছাড়া কারো কাছে গিয়ে সে শান্তি পাবে না। অর্কের প্রতি তার সীমাহীন নির্ভরতার অনেক যুক্তি আছে। একটা একটা যুক্তি সে বিশ্লেষণ করে দেখল। অর্ক হয়তো তাকে দেয়া কথা ভুলে যেতে পারে, কিন্তু সে ভুলবেনা। ভুলে যাওয়া মানে তার পরাজয়। সে কিছুতেই হারতে পারে না। প্রচণ্ড এক জিদ ভর করলো তার দেহ-মনে। জীবন নিয়ে খেলার সিদ্ধান্ত তখনি নিয়ে ফেললো সে। তারপরই ভাবল, অর্ককে একটি মেইল করলে কেমন হয়? যা ভাবা তা করা। মেইলে লিখতে লাগলো সে -
প্রিয়,
তোমার বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। তোমার প্রতি অভিমানও নেই, এমনকি তোমার কাছে চাওয়া-পাওয়াও নেই । শুধু এক বুক ভালোবাসা আছে। এই ভালোবাসা শত অপমানে, অসন্মানেও অটল। এই ভালোবাসায় কোনও নোংরামি বা অস্বচ্ছতা নেই। এই ভালোবাসা ভালোবাসার বিনিময়ে ভালবাসাও আশা করে না। শুধু তোমার কাছে থাকার, তোমার সকল প্রয়োজনে সাড়া দেবার, তোমাকে খুশি রাখার এক অনন্ত আকুলতা এ হৃদয়ের গভিরে প্রোথিত।
আমি যতটুকু জানি, তুমি ভুল করে আমার কাছে চলে এসেছ। তোমার ভুলটাই আমার জীবনের চরম সত্য। আমার সত্য নিয়ে আমি সারা জীবন বেঁচে থাকতে পারবো। কারণ, এই সত্যের পেছনে আমি আজীবন ছুটেছি। যেহেতু সত্য আমার জীবনে আলো হয়ে এসেছে, এই আলোই আমার জীবন পথের প্রেরণা হয়ে আমাকে শান্তির পারাবারে নিয়ে যাবে। আমি অনন্ত শান্তির বারিধারা পান করার জন্য আমার জীবনের বাকি দিনগুলো পার করে দিতে পারবো।
দুজন পথিক কথা বলতে বলতে যাচ্ছে, তাঁদের কথা শুনল পাশে দিয়ে যাওয়া এক পথচারী। এই পথচারী ওই দুই ব্যক্তির একজনের একটা কথা হৃদয়ে নিয়ে জীবন পার করে দিল, আর যারা কথা বলছিল তারা তা হয়তো ওইসময়ই ভুলে গিয়েছিলো। আমি সেই পথচারী যে তোমার কথা আমৃত্যু মনে রাখবে। কারণ, আমাকে তুমি যা দিয়েছ, তা পৃথিবীর কোনও মানুষ আমাকে দিতে পারে নাই, পারবেও না। আমি তা চাইও না। জীবনের অনেক সময় কেটে গেলো তোমার দেখা পেতে পেতে, বাকিটা কেটে যাবে তোমার তপস্যা করতে করতে। তোমার ধ্যান ভাঙুক, অথবা না ভাঙুক – আমি আমার সাধনা চালিয়ে যাব। আমি জানি, সাধনায় সিদ্ধি লাভ হয়।
তুমি হয়তো ভাবতে পার আমি আবেগপ্রবণ। মোটেই কিন্তু তা নয়। আবেগ খুবই ক্ষণিকের এক অনুভূতি যার স্থায়িত্ব অল্প সময়। আমার জীবনের আগা–গোঁড়া মনের মানুষের ধ্যানে কেটেছে যা কোনওভাবে আবেগ নয়, এটা নিরন্তর বাস্তবতা। আর সেই মনের মানুষ হয়ে তুমিই এলে আমার জীবনে।তোমার সাথে কাটানো দিনগুলো আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন, সেই স্বপ্নের দিনগুলো বুকে নিয়ে আমার পক্ষে বাকি জীবন পার করে দেয়া সম্ভব।
আমার ভালোবাসা কি একতরফা ছিল? না, এটার ফুরসত তুমি আমাকে দাওনি। তোমার প্রবল জোয়ারে আমার দুকুল যখন একটু একটু করে ভাঙছিল, আমিতো সেই ভাঙনে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছি। আমি চেয়েছিলাম আরও ভাঙতে। কিন্তু তুমি হঠাৎ জোয়ার বন্ধ করে দিলে। একি আমার অপরাধে, নাকি তোমার সকল অভিপ্রায় পূরণ হয়ে যাবার কারণে? এখানেও আমার কোনও অভিযোগ নেই। আমি তোমার বিরুদ্ধে কোনও জিঘাংসা পোষণ করি না, কৈফিয়তের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতেও চাই না। কারণ, তোমার কোনও অপমান আমার নিজেরি অপমান। তোমাকে অশ্রদ্ধা করবো – এমন কথা আমি কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি।
জান, প্রতি রাতের মতো কাল রাতেও তুমি আমার স্বপ্নে এসেছিলে। আমার স্বপ্নপুরুষ আমাকে নিয়ে কত রকমের খেলা খেলেছে, আমাকে সুখ সাগরে ভাসিয়েছে। হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখি, এটা আমার স্বপ্ন। মানুষ দিনে যা ভাবে, তা নাকি রাতে ঘুমের মাঝে আসে। কে জানে? নিজেকে বেশি প্রশ্ন করতে আজকাল ভয় লাগে। চলে যাক না দিন!
তুমি হয়তো ভাবতে পার, আমি তোমার শরীরকে ভালবেসেছি। নিজেকে বারবার প্রশ্ন করেও আমি এর উত্তর পাই নি। শরীরের প্রতি আমার তেমন মোহ নেই, আমি শুধু তোমার ডাকে সাড়া দিয়ে তোমার স্পর্শে অদ্ভুত ভাললাগায় কেঁপেছি, তোমার কঠিন আলিঙ্গনে চরমভাবে শিহরিত হয়েছি, তোমার সকল ইচ্ছেগুলোকে পূরণ করে দিয়েছি। কারণ তোমার ইচ্ছেকে না করবো, এতবড় দুঃসাহস আমার ছিল না। তুমি যখনি আমাকে বউ বলে ডেকেছ, আমার সমস্ত অন্তরাত্মা অন্যরকম এক ভাললাগার অনুভূতিতে ছেয়ে যেত।
এই দিনগুলো বুকে নিয়ে আমি বাঁচতে চাই।তুমি দূরে থাকো অথবা কাছে থাকো – আমার কাছে সবই সমান। আমি জানি, আমার সারা সকাল-দুপুর-বিকা
‘তুমি সুখ যদি নাহি পাও, যাও সুখেরও সন্ধানে যাও
আমি তোমারে পেয়েছি হৃদয়ও মাঝে , আরও কিছু নাহি চাই গো’
তোমার চিরদিনের সঙ্গী
ঋত্বিক
মেইলটা পাঠিয়ে ক্লান্ত শরীরে সে ঘুমিয়ে পড়ল। ঘুমের মাঝে সে স্বপ্ন দেখল, অর্ক এসে ডাকছে, আলিঙ্গন করছে।বলছে, বউ, তোমাকে ছেড়ে আমি থাকতে পারছি না। তাই তোমাকে নিয়ে যেতে এসেছি। আমি তো কেবল তোমাকে পরীক্ষা করছিলাম। তুমি পাস করেছো। আমি শুধু তোমাকে ভালবাসি।চুম্বনে
একরকম নিরানন্দেই কেটে যাচ্ছিল ঋত্বিকের দিন। চেষ্টা করছি ওকে সঙ্গ দেবার। কিন্তু মনমরা ভাবটা সে কোনোভাবেই কাটিয়ে উঠতে পারছিল না। এর মধ্যেই একদিন দেখি, সে খুব স্বাভাবিক। আবার আগের মতো হাসিখুশি,প্রাণচ
সে বলল, তার ওই বন্ধুটা ভিতরে ভিতরে নাকি বহুগামি ছিল। সে যখন অফিসে থাকতো, তখন অন্য লোককে তার বাসায় নিয়ে আসতো। সেদিন কি কারণে সে খবর না দিয়ে বাসায় এসে দেখে, তার বন্ধুটি অন্য লোক নিয়ে ফুর্তি করছে।
ওই ঘটনা নাকি তার চোখ খুলে দিয়েছিলো। কয়েকদিন নিজের সাথে বোঝাপড়া করে অবশেষে আমার কাছেই ছুটে আসলো।
বললাম, তাহলে এখন থেকে তুই আর নাস্তিক নস?
সে বলল, অর্ক যতদিন আমার সাথে থাকবে ততদিন আস্তিক থাকবো।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
গল্পটি প্রথমে ফেসবুকে প্রকাশিত হয়। ফেসবুকে পাঠক মন্তব্যের কিছু অংশঃ
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
রৌদ্দুর সেনগুপ্ত
মোটামুটি
মোটামুটি
আস্তিকতা আর নাস্তিকতা এখানে না টানলেই হত। তবে সমালোচনাটুকু লেখকের প্রতি সম্পুর্ন সম্মান প্রদর্শন জানিয়ে
Golper bishoy bostu te astikota-nastik otar k0no vumika-e to nei!!!
Sondor Ekta Mon Chai
Valobasha r Dormo k Bishesh kora na kora ki Ek ??
Valobasha r Dormo k Bishesh kora na kora ki Ek ??
অল্প বিরাম
গল্প টা সুন্দর কিন্তু গল্পের মাঝে শেখার কিছু নেই । গল্পটা আমার কাছে খুবই সাধারন মনে হয়েছে।গল্পে বিশেষ কিছুই ছিলোনা
গল্প টা সুন্দর কিন্তু গল্পের মাঝে শেখার কিছু নেই । গল্পটা আমার কাছে খুবই সাধারন মনে হয়েছে।গল্পে বিশেষ কিছুই ছিলোনা
RealFriend Chai
valo laglona......
valo laglona......
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন