২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ময়ূরপঙ্খী নাও (পর্বঃ ০১-০২)

প্রথম পর্বঃ

কিছু মানুষকে বিধাতা হয়তো প্রখর ভাবে উপলদ্ধি করার ক্ষমতা দিয়ে থাকেন। সম্ভবত আমি তাঁদের একজন। আমার জীবনে ভালোবাসার অভাবটা বাড়াবাড়ি পর্যায়ের, তাই ভালোবাসার মূল্যটা খুব কাছ থেকে দেখে এসেছি। থাক সে কথা, বাস্তবতাকে এখন আমি সব থেকে বেশি ভয় পাই । যখনই কোন দুর্ভাগ্য আমর কপালে এসে জোটে তখনি ভাবি এটাই বাস্তবতা । তোমাকে হারানোটাও এই বাস্তবতার অংশ । এটা যদিও তোমার কথা ছিল । তোমার সাথে পরিচয়ই আমার বাস্তবতার সব থেকে বড় উপহার । কোন এক আশ্বিণে দেখা হয়েছিল তোমার সাথে। অফিস থেকে ফেরার পথে বৃষ্টি শুরু হল। আমি দাড়িয়ে ভিজছি অসময়ের বাদল ধারায়, ধ্যাত আজ একটাও সি.এন.জি পাচ্ছি না, অমন অসময়ই তুমি এলে এক আগুন্তুক হয়ে। এসে আমার পথ আটকিয়ে দাঁড়ালে। আগে কখনও দেখিনি তোমকে । বললে, “ যাবেন ?” সি.এন.জি তে তুমি একাই ছিলে। আমি ভাবলাম ভিজে জ্বর বাবাজি কে নিমন্ত্রন না জানিয়ে উঠে পরি । কিছু সময় আলাপ হল আমাদের। পরদিন আবার দেখা সেই একই জায়গায় । ফোন নাম্বার আদান প্রদান। অল্প দিনের মধ্যে খুব বন্ধুত্ব হয়ে গেল ।

প্রায় এক মাস পর সেই দশমীর সন্ধ্যা । আজও সেকথা মনে হলে মন আনন্দে ভরে উঠে। চারিদিক থেকে উলু ধ্বনি আর ঢাকের শব্দ ভেসে আসছে । সিঁদুর খেলাও প্রায় শেষ,বিসর্জণের আরতী শুরু হয়ে গিয়েছে । এখনি বিসর্জন হবে বোধহয় । এত উৎসব এর মধ্যে ও আমি বসে আছি একা একা । তুই এসে আমার পাশের চেয়ারটায় বসলি, জিজ্ঞেস করলি, - “আমাকে তোর কেমন লাগে রে ?” - “তুই একটা জঘন্য পাবলিক” বলেই হেসে দিলাম । - “তুই কিন্তু আমার অনেক পছন্দের ।“ ব্যাগ থেকে অনেক গুলো পদ্ম ফুল বের করলি আর একটা নীল খাম। আমি একটু অবাকই হলাম, ফুল আর খামটা দিয়েই বললি: “এবার আমি চললাম” বলেই ভিড় এর মধ্যে কথায় যেন হারিয়ে গেলি। বাসায় এসে দেখলাম ১১টা পদ্ম। ১০টা নীল পদ্মের মাঝখানে ১টা শ্বেত পদ্ম, এবার তোর নীল খাম খোলার পালা, খাম খুলে দেখি তোর লেখা চিঠি। আজও মনে আছে চিঠিটা………




Dear Babu,

This is my 1st letter to you, i want to clear you about me & myself so that in the long run u don't have to hesitate whether u will carry on with me or not. So I’m writing this letter, Babu I m not a prince, not so much a bright student, not so much intelligent. I m very simple and ordinary. Nothing is special in me ,i m a person of backdated, illogical, foolish, & may be with a lot of bad luck. i just believe one thing every relation stands on the base of trust & truthfulness, if there is no trust there is no relation, but Babu one thing u mast remember some times what we see that's not true & what is true we can’t see. I hope u understand what i want to mean, i think most of the things are not on the basis of logic.

I just believe what my mind says to me , i believe God lives in our mind. so most of the time my mind says me the truth. It’s my habit . Now my mind is saying only one thing and that is i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love ui love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love ui love u i love u i love u i love u i love u i love ui love u i love u i love u i love u i love u i love ui love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love ui love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u i love u you believe it or not its totally up to you . but my mind also says that you are only mine. & u love me more than i do. i don't want to lose you. thats why i try to explain myself. But may be again i have failed in this exam. ar boro kora hoyto uchet hocha na , tome hoyto boar hocho, ke korbo bolo ame aktu amon e. কি পছন্দ হয়!

এই গাধা মার্কা বোকা মানুষটাকে? valo thako. Tomer …………. তোর কাঁচা হাতের ভুল ইংরেজিতে লেখা চিঠিটা পড়ে মজা যতোটা না পেলাম, তার চেয়ে অবাক হলাম বেশি। মাথা কাজ করছেনা………………… কি করবো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না, আমার জীবনে নতুন করে কোনও pain ডেকে আনার কোন মানে হয়না কিন্তু তোকেও তো আমি কষ্ট দিতে চাইনা, সিদ্ধান্ত নিলাম তোকে চিঠিতেই আমার অতীত জানাবো। তাই কাগজ কলম নিয়ে বসলাম, চোখের সামনে ভেসে উঠছে স্মৃতির অতল তলে হারিয়ে যাওয়া ময়ূরপঙ্ক্ষী নাও।

পর্বঃ ০২

পাখি,
সবাই এখন ঘুমে । তুইও । শুধু আমি একা জেগে । কিছু রাত পাখি বাইরে ডাকছে । ওরা আমার সঙ্গী ।হয়ত আমি একা ভয় পাব ভেবে ওরা আমায় সঙ্গ দেয় । অনেক দিন পর কারও কাছ থেকে চিঠি পেলাম । ।
আমি এখনও জানি না আমি কোন পথে এগুচ্ছি । ভালো নাকি মন্দ । তবে আমি এওটুকু বুঝি আমি তোকে মিস করি । কারণে কিংবা অকারনে । একে আর যাই বলুক ভালোবাসা বলে কি না আমি জানি না । তবে যখন খেতে বসি তখন তোর কথা খুব বেশিই মনে হয় । রাতে যখন ঠাণ্ডা বিছানায় ঘুমোতে যাই তখনও মনে হয় তোর কথা । আজকাল সন্ধ্যের পর অফিস থেকে যখন বের হয়ে যখন সি আন জি র জন্য দাড়াই তখনও অবচেতন ভাবেই তুই আমার মনে চলে আসিস । এর শেষ কোথায় ? কে জানে ?

তখন ২০০৫ সাল । আমি একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়য়ে পড়ি । অবসর সময়ে ঘুরি ফিরি আড্ডা দিই । ইয়াহু তে খুব চ্যাট করতাম । তখন ছেলে- ছেলে সম্পর্কের ব্যপারটা খুব ভালো করে জানি না । ভাসা ভাসা শুনেছি । ওর নাম ছিল অমি । সেখানেই তার সাথে পরিচয় । একদিন আমার সেল নম্বর নিল । তারপর থেকেই মাঝে মাঝে কথা হতো । একদিন ভার্সিটির কাছে এক বার্গার শপ এ বসে বার্গার খাচ্ছিলাম । এমন সময় তার ফোন । সে হাউ মাউ করে কাঁদছে । আমি বললাম কি হয়েছে? ও কান্নার চোটে বলতে পারছিল না । আমি তাকে আমার এখানে আসতে বললাম ।
কিছুক্ষণ পর সে আসল । এসে আবার কান্না । আমি পুরপুরি অপ্রস্তুত । আশেপাশের মানুষজন তাকিয়ে দেখছিল । আমি তাকে শান্ত হয়ে বসতে বললাম । ও বসল । এরপর যা শুনলাম তা হল... ওর লাভারের সাথে ওর ব্রেক আপ হয়েছে। আমি যতদূর পারি সান্ত্বনা দিলাম । এরপর থেকেই আমি ওকে সময় দিতাম, একসাথে দুজন ঘুরতাম ।ওর সাথে পরিচয়ের কিছুদিন পরেই ছিল দুর্গা পুজা । আমরা দুজন মিলে পুরো ঢাকা ঘুরে পুজা দেখলাম । একটা সময় বুঝতে পারছিলাম যে ও আমার প্রতি দুর্বল ।
বেশ কিছুদিন পর শাঁখারি বাজার যাই দুজন । একটা কালি মন্দিরে । সেখানে বসে দুজন বসে কালি মূর্তির কাঠামো বানানো দেখছিলাম । ও হথাত আমায় বলল,
-      আমি তোমার কাছে একটা জিনিস চাইব, দেবে ?
-      হুম ! বল ।
-      আমি তোমাকে চাই ।
-       কেমন করে চাও ।
-      আমার মা যেভাবে বাবা কে চায় ।
-      তোমার মাথা কি ঠিক আছে ? এটা কি আমাদের সমাজ মানবে ?
-      আমরা লুকিয়ে বিয়ে করব । কিন্তু সব আচার অনুষ্ঠান মেনে ।

আমি মোহগ্রস্থের মত সব মেনে নিলাম।আমরা ঠিক করলাম বিয়ে করব । শাঁখারি বাজার থেকে শঙ্খের আংটি কিনলাম । যেহেতু সে ছেলে, শাঁখা পড়তে পারবে না তাই এই ব্যবস্থা । গলায় পড়ার জন্য মঙ্গল সুত্রের পরিবর্তে একটা ওম লেখা লকেট কিনলাম । তারপর একদিন লগ্ন দেখে আমাদের কুল মন্দিরের সামনে দেবতাকে সাক্ষী রেখে ওর কপালে আঙ্গুলের রক্ত দিয়ে সিদুর পরিয়ে দিলাম । ও আমায় প্রনাম করল । এবার ওর বাসায় ও আমার বন্ধুদের দাওয়াত করল । অনেকটা বরযাত্রীর মত । দিনগুলো সুখেই যাচ্ছিল । স্বপ্নের মত । আমাদের মাঝে শারীরিক কোন সম্পর্ক তখনও হয় নি । দুজনের মাঝে শুধু ভালোবাসা আর আবেগ । দুজন ক্লাস করে সারা ঢাকা শহর টই টই করে ঘুরে বেরাতাম । কখনও ফুচকা, কখনও বার্গার, কখনও সিনেমা । বেশ চলছিল । বিয়ের পর প্রথম যেদিন ওর বাসায় গেলাম নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছিল । নিজেকে সত্যি জামাই জামাই লাগছিলো ।অমি ওর বাবা, মা ছোটো ভাই আর কাকার কাছে বলল, আমি তার খুব ভালো বন্ধু ।ওর মা আমায় নিজের ছেলের মত আদর করতেন । এখনও ভুলতে পারি না মাসিমার মুখটা । মাসিমা সাজতে খুব ভালবাসতেন । কপালে বড় সিঁদুরের টিপ পরতেন । ওর ছোটো ভাইটা আমার খুব পাগল ছিল । মনে হতো ও বোধয় আমারই ছোটো ভাই । ভালই যাচ্ছিল সব । আমার সব কিছু সে পছন্দ করে দিতো । আমার জন্য এটা কিনত ওটা কিনত। ওর সব জিনিসও আমার কিনে দিতে হতো । আমার তখন খুব কষ্ট হতো । কারণ তখন আমি ছাত্র ছিলাম। টাকা ছিল না এখন কার মত । তারপরেও চেষ্টা করতাম  ওর প্রয়োজন মেটানোর । কেননা ধর্মমতে আমরা জামাই বউ ।

বিয়ের কয়েকমাস পেরিয়ে গেল । কিন্তু আমাদের মাঝে তখনও বাসর হয় নি । একদিন আমার বাসায় কেও ছিল না । আমি ওকে আমার বাসায় আসতে বললাম । ও আসার আগেই ওর জন্য ফুচকা এনে রাখলাম । ও খুব পছন্দ করত তাই । ও এসে ফুচকা দেখে খুশিতে আত্মহারা । দুজন মিলে গল্প করছিলাম । হথাত ও আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে লাগলো । আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলাম না । ওর সারা গায়ে আমার আদর দিলাম । ওকে কোলে করে আমার বিছানায় শুইয়ে দিলাম । ওর পা থেকে মাথা পর্যন্ত এমন কোন জায়গা নেই যেখানে আমি চুমু খাই নি । ও বারবার চিৎকার করে আমায় জড়িয়ে ধরছিল আনন্দে । আমিও একটা নতুন সুখ পাচ্ছিলাম । ভালোবাসার মানুষকে শরীর দিয়ে পাওয়ার মত পূর্ণতা আর নেই । সব কিছু শেষে আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কি সুখি ? ও অনেক রেগে গেল । আমি ক্ষমা চাইলাম । ও হাসল ।

কোন মন্তব্য নেই:

আমাদেরও কিছু গল্প আছে। শোনার মত মানসিকতা কি আছে তোমার?

আমাদেরও কিছু গল্প আছে। শোনার মত মানসিকতা কি আছে তোমার?