০৯ অক্টোবর, ২০১৫

অতঃপর ভালোবাসা

দৃশ্যঃ এক
২৫ অক্টোবর, শুক্রবার, সকাল ১১ টা
অফিস ছুটি। তাই একটু দেরি করেই ঘুম থেকে উঠলো রায়হান। এক হাঁতে গরম ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ আর অন্য হাঁতে ভাঁজ খোলা পত্রিকাটা নিয়ে ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে প্রধান প্রধান সংবাদ গুলাতে চোখ বুলাতে লাগলো।খুন,ধর্ষণ,মারামারি, আত্মহত্যা,নির্যাতন সহ যেকোনো ধরণের সহিংসতার নিত্যনৈমিত্তিক বার্তাগুলো রায়হানের কাছে বরাবরই বিরক্তিকর লাগে।
এসব খবরে সর্বদা অনীহা থাকা সত্ত্বেও আজকে কেন জানি পত্রিকার প্রথম পাতাতেই লেখা একটা চাঞ্চল্যকর সংবাদ “মেডিকেল কলেজের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে যুবকের আত্মহত্যা” সংবাদটা ভীষণ মনোযোগ সহকারেই পড়ছিল রায়হান; ঠিক এমন সময়ই তাঁর মা আগেরদিন বিকালে রায়হানের নামে আসা একটা চিঠি তাঁর হাঁতে দিয়ে গেলো। আচমকা তাঁর কাছে কোন চিঠি আসতে পারে এমনটা ভেবে বিস্মিত হবার চেয়ে,ডিজিটাল যুগেও যে কেঁউ কাউকে চিঠি পাঁঠাতে পারে,তাও আবার কিনা তাঁর মত এক আনাড়ি পাবলিকের কাছে;সেটা ভেবে তাঁর অদ্ভুত সুন্দর বাঁকা ঠোঁট দুটিতে মৃদু হাঁসির রেখা দেখা গেল পাশাপাশি সে কিছুটা অবাকও হল। চিঠিটা উল্টাতেই দেখল খামের উপর প্রেরকের নাম লেখা আছে অপূর্ব, ঠিকানা লেখা ছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতাল, ব্লক ডী,রুম নং ৩১৩,বেড নং ২৩। খামের উপরে লেখা প্রেরকের নাম-ঠিকানা পড়ে রায়হানের বুকটা দুরুদুরু করে কেঁপে উঠলো,ভ্রু জোড়া কুঁচকে গেলো,হাতের চায়ের কাপটা মেঝেতে লুটিয়ে পড়লো,মাথার উপরে প্রচণ্ড জোরে ফ্যানটা ঘোরা সত্ত্বেও কপালে ঘামের বিন্দু বিন্দু ফোঁটা জমতে লাগলো। কারণ পত্রিকায় প্রকাশিত মেডিকেল কলেজে আত্মহননকারী যুবকের যে নাম-ঠিকানা প্রদত্ত ছিল; কাকতালীয়ভাবে ঐটার সাথে তাঁর হাতের চিঠির নাম-ঠিকানা হুবহু মিলে গেলো। কিন্তু রায়হান কিছুতেই বুঝে উঠতে পারলো না কে এই অপূর্ব? আর কেনই বা তাঁর কাছে চিঠিটা আসলো? পত্রিকার অপূর্ব আর চিঠির অপূর্ব কি একই ব্যক্তি,নাকি ভিন্ন কেঁউ?? এসব ভেবে প্রচণ্ড ভয়ে সে চিঠিটা খুলতেও সাহস পাচ্ছিলো না।

দৃশ্যঃ দুই
এর কিছুদিন আগের ঘটনা...........................
(২ অক্টোবর,বুধবার,রাত প্রায় সাড়ে ১২ টা, রায়হানের মোবাইল বেজে উঠলো...)
রায়হানঃ হ্যালো!!! আসসালামু আলাইকুম!!! কে ?? (ঘুম কাতুরে কণ্ঠে)
অপূর্বঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম !!! কেমন আছো ???
রায়হানঃ ভালো আছি?? কিন্তু আপনি কে?? আপনাকে ঠিক চিনতে পারলাম না ??
অপূর্বঃ ও আচ্ছা, আমি অপূর্ব। আর এটা আমার নতুন মোবাইল নম্বর।
রায়হানঃ সরি!! কোন অপূর্ব?? আপনার সাথে আমার আগে কি কখনো কথা হয়েছিলো??
অপূর্বঃ আরে হ্যাঁ!! আমি সেই অপূর্ব। সাভারের অপূর্ব। তোমার সাথে প্রায় তিন মাস আগে আমার দেখা হয়েছিলো?? তোমার মনে নেই,আমি তোমার বাসায় গিয়েছিলাম,এমনকি রাতে তোমার সাথে ছিলামও! তোমার বাসা তোঁ ধানমণ্ডি ১৫ নম্বরের,মুজিব সড়কের কনকর্ড টাওয়ার এর পঞ্চম তলায়। তাই না??
রায়হানঃ ও হ্যাঁ!! এইবার চিনছি!! আরে তুমিই আমার সেই Lovely Bird অপূর্ব,ঠিক তোঁ??
অপূর্বঃ হা হা হা...... একদম ঠিক ধরেছ । তারপর কি অবস্থা তোমার কেমন চলছে সব?? অনেকদিন পর তোমার সাথে কথা বলতেছি??
রায়হানঃ এইতো যাচ্ছে ভালই,সেই কবে আমার বাসায় এসেছিলে,কিন্তু এখন পর্যন্তও আমার নাম-ঠিকানা তোঁ দেখি তোমার হুবহু মুখস্তই আছে। তোমার স্মৃতিশক্তি তো দারুন প্রখর... হা হা হা!
অপূর্বঃ থাকবেই তোঁ। আমার কি তোমার মত এত বন্ধুবান্ধব আছে নাকি যে ২/১ জনকে ভুলে গেলেও কোন কিছু যায় আসে না?? যাকে একবার মনে ধরে তাঁকে সারাজীবনই মনে রাখি, বুঝলা।
রায়হানঃ আরে কি যে বল না। তোমার এই নম্বরটা তো নতুন,তাঁর উপর আবার এতো রাতে কল দিয়েছো তাই চিনতে পারিনি। তাছাড়া সেই কতো আগে তোমার সাথে কথা হয়েছিলো তাই তোমার কণ্ঠস্বরও মনে ছিল না। আচ্ছা বাবা সরি! এইবার হল।
অপূর্বঃ হা হা হা... আরে সরি বলার কি হল!!আমি একটু মজা করলাম আর কি!! আচ্ছা সত্যি করে একটা কথা বলতো, আমার কথা কি তোমার একটুও মনে ছিল ?
রায়হানঃ আবার জিগায়!! তোমাকে কি এতো সহজে ভোলা যায়। তোমার নরম তুলতুলে শরীর আর মিষ্টি ভেজা দুইটা ঠোঁট। উহ আমার তোঁ এখনও প্রায়ই মনে পড়ে আমি প্রায় সারারাত ধরে তোমার বুকের মধু খেয়েছিলাম। তোমার বুকের উচু দুই পাহাড়ে আমার জিব্বা দিয়ে কত আদর করেছিলাম আর তুমি পাখির মত ছটফট করছিলে। তারপর তুমি আমার চকলেট খেয়েছিলে,সেটাকে সযত্নে তোমার গুপ্ত গুহার ভেতোরে ঢুকিয়ে আমাকে কত মজা দিয়েছিলে। এগুলা কি ভোলা যায়???
অপূর্বঃ ছি ছি ছি.. শয়তান,ফাজিল.... তুমি আমার শরীরটাকেই শুধু ভালবাসছিলে,আমাকে নয়?? তোমরা আসলেই কেমন যেন?? মনের চেয়ে শরীরের দাম তোমাদের কাছে অনেক বেশি।
রায়হানঃ হি হি হি... আরে পাগল তুমি তোঁ দেখি মজা করাও বুঝনা। আমি এতক্ষণ ফাজলামো করলাম বোকা!! আচ্ছা এখন বল এতদিন তোমার নম্বর বন্ধ ছিল ক্যান?? কি হইছিল তোমার?? কোন সমস্যা ??
অপূর্বঃ সে অনেক কথা... অনেক কিছুই ঘটেছে আমার জীবনে,সব কিছুই বলব তোমাকে। তোমার সাথে আমার একটু জরুরি দরকার আছে। তুমি কি আগামী ২/১ দিনের মধ্যে ফ্রি আছো???
রায়হানঃ আমার বাসায় তোঁ এখন আর আগের মত Place হয় না, আগামী ২/১ দিনের মধ্যেও হবার কোন চান্সই নাই। সেই জন্যই অনেকদিন যাবত কিছুই করা হচ্ছে না।
অপূর্বঃ ধুর... আবার ফাজলামি করতেছো। প্লিয...উল্টাপাল্টা কথা বইলো না,মেজাজ এমনিতেই খারাপ আছে?? আমি কি তোমার সাথে সেক্স করার কথা বলেছি নাকি ?? অন্য একটা প্রয়োজনের কথা আলোচনা করবো, তোমার সময় হবে কিনা তাই বল??? নইলে ফোন রেখে দিলাম কিন্তু??
রায়হানঃ হা হা হা... তুমি তো আগে রাগি ছিলা না? এখন একটু মজা করলেই সাপের মত ফোঁস কইরা ওঠো দেখি,তোমার ঐ মধু মাখা শরীরে এতো বিষ আসলো কোত্থেকে শুনি ?? আচ্ছা ঠিক আছে আগামী ২দিন আমি একটু ব্যস্ত থাকব,তুমি ৫ তারিখ বিকাল পাঁচটার তাঁর দিকে ধানমণ্ডি লেকে আসো,ওখানে আড্ডা দেয়া যাবে।
অপূর্বঃ আচ্ছা ঠিক আছে, তোমাকে অনেক ধন্যবাদ সময় দেয়ার জন্য। তাহলে ৫ তারিখ বিকালে দেখা হবে। এখন ঘুমাই। Good Ni8....Bye
রায়হানঃ ok....Bye, Take care ………………

দৃশ্যঃ তিন
৫ অক্টোবর,শনিবার, বিকাল ৪.৩০
বিকাল ৫ টায় দেখা করার কথা থাকলেও অপূর্ব একটু আগে-ভাগে এসে ধানমণ্ডি লেকের রবীন্দ্র-সরোবরে বসলো। প্রায় তিন মাস আগে এইখানেই রায়হানের সাথে অপূর্বর প্রথম দেখা হয়েছিলো। সেইদিন ফাজিলটা আচমকা পেছন থেকে এসে সজোরে অপূর্বর পিঠ চাপড়ে দিয়ে ওকে প্রায় ভয়ই পাইয়ে দিয়েছিলো, অবশ্য অপূর্ব পেছনে ফিরে তাকাতেই রায়হানের হাঁতে থাকা লাল গোলাপটা দিয়ে সেদিন তাঁকে মুগ্ধ করেছিল। কথাগুলি ভেবে অপূর্বর মুচকি হাঁসি পেল। রায়হানের সুদর্শন মুখখানা দেখার জন্য অপূর্বর ভেতরেও কেমন জানি একটা অজানা অস্থিরতা বিরাজ করতে লাগলো। শয়তানটা যে আজকেও দেরি করে আসবে সেটা অপূর্বর বুঝতে বাকী রইল না, যখন দেখল ঘড়ির কাঁটা প্রায় সাড়ে ৫ টা ছুঁইছুঁই। পৌনে ৬ টার দিকে কেতাদুরস্ত পোশাক পরিহিত অবস্থায় একেবারে ফিটফাট ভাবে রায়হানের আবির্ভাব ঘটলো। প্রায় ৬ ফুট লম্বা মানুষটার পরনে ছিল একটা গ্রিন কালারের টি-শার্ট,গাড় নেভি ব্লু কালারের জিন্স প্যান্ট,পায়ে সু,বা হাঁতে একটা বড় ডায়ালের ঘড়ি আর ডান হাঁতে ছিল সোনালী কালারের একটা ব্রেসলেট। জিম করা শক্তপোক্ত শরীরের সাথে মানানসই পোশাকে তাঁকে ঋত্বিক রোশান বা জন আব্রাহামের চেয়ে কোন অংশেই কম সেক্সি বা পৌরুষদীপ্ত মনে হচ্ছিলো না। সাথে সেই আগেকার মতই চুইনঙ্গাম চিবুতে চিবুতে আর দুষ্টু হাঁসি দিতে দিতে অপূর্বর সামনে এসে দাঁড়ালো। এতোটা দেরি করে আসাতে অপূর্বর ভেতর ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় যে রাগ টগবগ করে ফুটতে ছিল,রায়হান কে দেখার পর সেটা নিমিষেই যেন কোথায় হারিয়ে গেলো। তবে অপূর্বকে সবচেয়ে বেশি বিস্মিত করলো, যখন রায়হান পকেট থেকে লাল গোলাপটা বের করে অপূর্বর হাঁতে দিয়ে প্রথম দিনের পুনরাবৃত্তি ঘটাল।
রায়হানঃ আরে তোমাকে দেখতে তোঁ আগের চেয়ে অনেক সুইট আর সেক্সি লাগতেছে।
অপূর্বঃ হা হা হা... এসেই শয়তানি শুরু করলা,তুমি ঠিক তেমনই আছো একটুও বদলাও নি। আগে বল দেরি করলা কেন?? কি শাস্তি নেবে আমাকে এতক্ষণ অপেক্ষা করানোর জন্য??
রায়হানঃ সেই প্রথম দিনই খেয়াল করেছিলাম,তুমি রাগলে তোমাকে দেখতে বেশি কিউট লাগে। তাই ইচ্ছা করেই দেরি করে এসেছি তোমার মিষ্টি ও মায়াবী মুখের অসাধারণ রাগীরাগী ভাব দেখার জন্য। আর শাস্তি যদি দিতেই চাও, তবে দাও আমার দুই গালে মিষ্টি করে তোমার ঐ নরম ঠোঁট দুখানা ছুঁয়ে দাও। আমিতো প্রথম দিনই তোমার ঠোঁট আর মুখখানা দেখেই তোমার প্রেমে পড়ে গেছি, আর অন্যান্য জায়গাগুলোর কথা না হয় নাই বললাম......।
অপূর্বঃ হা হা হা...তুমি পারোও বটে। যাও বিশ্বের এক নম্বর চাঁপা বাজ হিসাবে তোমাকে অভিহিত করলাম। আচ্ছা বল কেমন ছিলা, কেমন আছো??
রায়হানঃ আছি ভালই! কিন্তু তোমাকে এমন বিষণ্ণ লাগতেছে কেন?? মনে হচ্ছে অনেক ঝামেলার মধ্যে আছো?? আচ্ছা তোমার জানি কি সমস্যার কথা আমাকে বলতে চাইছিলা? আর তোমার মোবাইল নম্বর আগেরটা বন্ধ কেন??
অপূর্বঃ ঐ মোবাইলটা আমি রাগ করে ফেলে দিয়েছি,তাই বন্ধ। তোমার সাথে শেষবার দেখা হবার কিছুদিন পরেই আমার আম্মা মারা যায়। আর আম্মা মারা যাওয়ার ২০ দিনের মাথায় আমার বাবা আবার দ্বিতীয় বিয়ে করেন। জানো,আমি না এই ঘটনা কিছুতেই মেনে নিতে পারতেছি না। এটা নিয়ে আমার বাবার সাথে প্রায়ই ঝগড়া হয়। একদিন উনি আমার গায়েও হাত তোলেন তাই সেদিন রাগে মোবাইলটা ফেলে দেই,পরে আর খুঁজে পাই নাই। ভাগ্যিস ডায়রিতে তোমার মোবাইল নম্বর টা লেখা ছিল,তাই তোমার সাথে সেদিন ফোনে কথা বলতে পারছিলাম।
রায়হানঃ হায় আল্লাহ কি বল এইসব! এত কিছু ঘটে গেল,আমি কিছুই জানতে পারলাম না??? কি হয়েছিল তোমার আম্মার??
অপূর্বঃ ব্লাড ক্যান্সার। প্রায় ছয় মাস ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করে তিনি অবশেষে বিদায় হলেন। আমাকে নিঃস্ব করে রেখে গেলেন। জানো, রায়হান !দ্বিতীয় বিয়ের পর আমার বাবা পুরাপুরি পরিবর্তন হয়ে গেছে। এখন সে আমার কোন খোঁজ খবরই রাখে না,আমি কি করি না করি,খাচ্ছি কিনা... কোন কিছুই জানতে চায় না। আগে তোঁ কলেজে যাবার সময় কিছু টাকা হাত খরচ দিত ইদানীং সেটাও বন্ধ করে দিছে। টাকা চাইতে গেলেই অযথাই রাগ করেন,চেচামেচি করেন। আর আমার নতুন মাও অনেক খারাপ,সেও কারণে অকারনে আমাকে বকাবকি করেন। আমার আর এইসব ভালো লাগে না,বাসায় থাকলে নিজেকে ওদের কাঁধের বোঝা মনে হয়। নিজেকে পরগাছার মতন লাগে। তাই আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি,সেই কথা বলার জন্যই তোমার কাছে আসলাম।
রায়হানঃ আমিতো ভাবতেই পারছি না মানুষ এমন হয় কি করে? আসলেই অনেক কষ্টে দিন যাচ্ছে তোমার। কি সিদ্ধান্ত?? কীসের সিদ্ধান্ত নিবা বল??
অপূর্বঃ দেখো আমি একটা কলেজ পড়ুয়া ছাত্র,আমারও তোঁ ব্যক্তিগত একটা হাত খরচ আছে। যত যাই হোক টাকা পয়সা ছাড়া তোঁ চলাফেরা করা সম্ভব না। নিজের প্রয়োজনীয় কত কিছুই তোঁ লাগে। আর যেহেতু আমার বাবা আমার কোন খোঁজ খবরই রাখে না,তাছাড়া আমি নিজেও তাঁদের উপর আর বোঝা হয়ে থাকতে চাই না,তদুপরি আমার মত এই উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়া পিচ্চি ছেলেকে কেইবা চাকরি দিবে। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি এই মাধ্যমে নিজেকে ব্যবহার করতে চাই, ভাবতাছি এখান থেকে যা কিছু আসবে সেটা দিয়েই চলব। আর তুমি আমাকে সাহায্য করবা।
রায়হানঃ কোন মাধ্যম?? কীসের মাধ্যম?? আমি কি সাহায্য করবো?? বুঝায়া বল??
অপূর্বঃ এইযে শুনেছি Facebook এ নাকি অনেকেই আছেন যারা টাকার বিনিময়ে ছোট ছোট ছেলেদের সাথে সেক্স করে। আর তুমি তোঁ facebook ব্যবহার করো, ঢাকায় থাকো তোমার তোঁ নিশ্চয় এমন কেঁউ পরিচিত আছে। তাই তুমি আমার সাথে এমন কাউকে পরিচয় করায়ে দাও,তাহলে আমার জন্য একটু উপকার হবে। আর আমি যেহেতু এইটা জীবনে তোমার সাথেই প্রথমবার করেছিলাম সুতরাং আমার তোঁ এই বিষয়ে একটা অভিজ্ঞতা আছেই,তাই আশা করতেছি শত কষ্ট হলেও আমি পারবো। আমাকে যে পারতেই হবে ।
রায়হানঃ পাগল নাকি?? মাথা ঠিক আছে তোঁ তোমার?? জানো তোমাকে প্রথমবার দেখার পর থেকে আমি তোমাকে কতোটা ভালবেসে ফেলেছি। আর তুমি আজকে কীসব আজেবাজে কথা বলতাছ। আমি আগে অনেক খারাপ ছিলাম কিন্তু তোমার সাথে দেখা হবার পর আর কারো সাথেই কিছু করিনি,আমি সত্যিই তোমাকে অনেক ভালবাসি,সেটা তুমি হয়ত জাননা। প্লিয তুমি এইসব কথা বইলো না। আমার শুনতেই বিরক্ত লাগতেছে। তোমার যখন যা লাগবে আমার কাছ থেকে চেয়ে নিবা, টাকা পয়সা অন্য যা কিছু লাগবে আমাকে বলবা।
অপূর্বঃ তোমাকে প্রথম দেখার পর থেকে আমিও তোমাকে অনেক অনুভব করেছি, তবে ভালবেসেছিলাম কিনা জানিনা। কিন্তু বাস্তবতার কঠিন গ্যাঁড়াকলে পরে আমার মন থেকে এইসব উঠে গেছে,এখন আর এসব ভেবে নিজেকে কষ্ট দিতে চাই না। এমনিতেই অনেক কষ্টে আছি। তুমি আমাকে আর কতোটা সাহায্য করতে পারবা, এভাবে তোমার কাছ থেকে সাহায্য নেয়াটা মোটেও উচিৎ হবে না। কারণ তোমাকে তোঁ আমি কিছুই দিতে পারবো না,শুধু ভালবাসা আর দেহ দিয়ে কি জীবন চলে?? নিজেকে আর কারো কাঁধের বোঝা করতে চাই না।
রায়হানঃ ছি... তুমি আমাকে এইরকম ভাবো?? যাকে ভালবাসবো তার জন্য করবো না তোঁ কার জন্য করবো,বলো?? দুই হাত জোড় করে বলতেছি তুমি এইরকম সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসো। আমাকে বিশ্বাস কর,আমার উপর একটু আস্থা রাখো। আমি সত্যিই তোমাকে অনেক ভালোবাসি,অনেক ভালবাসবো। প্রথম দেখাতে কাউকে আমার এতোটা ভালো লাগেনি যতটা তোমাকে লেগেছিল...তাছাড়া তোমাকে অন্য কেঁউ ব্যবহার করবে এটা আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারতাছিনা না।
অপূর্বঃ না, এইসব আমার পক্ষে সম্ভব না। আমি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেইটাতেই আমি অনড়। প্রথম দেখাতেই এতোটা ভালোবাসা আমার কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাছাড়া ভালোবাসার চেয়ে আমার কাছে এখন অন্যকিছুর চাহিদা বেশি বড়। তোমাকে ভালো বন্ধু হিসাবেই ভাববো,এর চেয়ে বেশি কিছু নয়। আর আমাকে যদি পারো একটু সাহায্য করো,না পারলে বল আমি চলে যাচ্ছি।
রায়হানঃ তোমাকে তো আমি এক্ষনি বিশ্বাস করতে বলছি না। আমাকে একটু সময় দাও । আমি ধীরে ধীরে তোমার আস্থা অর্জন করবো। সবকিছুই কি এতো দ্রুত সম্ভব।
অপূর্বঃ না, রায়হান । প্লিয এভাবে বলনা। আমি আমার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবোনা। আমি আমার জন্য কাউকে মানসিক কষ্টে রাখবে পারব না।
রায়হানঃ তাহলে তুমি আমার কোন কথাই শুনবে না। আমাকে একটুও বুঝবে না?? এতোটা একরোখা স্বভাব তোমার জানা ছিল না? আচ্ছা যাই হোক... তোমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আমার হস্তক্ষেপ করার কোন অধিকার নাই। আর করবোই বা কেন ? আমি তোমার কি হই ? আচ্ছা, বল কি ধরণের সাহায্য চাই, তোমার... দেখি আমি কিছু করতে পারি কিনা ??
অপূর্বঃ ধন্যবাদ, রায়হান। আমাকে বুঝতে পারার জন্য।
রায়হানঃ ধন্যবাদের কোন প্রয়োজন নাই । আমার কাছে যেকোনো লক আসলেই তাকে সাহায্য করি; তাই তুমিও তাদের মতই একজন।
অপূর্বঃ খুব রাগ করেছো বুঝি আমার উপর তাই না । যাইহোক, তোমার তোঁ Facebook এ অনেক পরিচিত আছে। আমার সাথে এমন কাউকে পরিচয় করিয়ে দাও,যার সাথে কিছুটা ব্যক্তিগত সময় কাঁটালে আমাকে কিছু টাকা দিবে। তিনি চাইলে আমি সারারাত তার সাথে থাকতেও রাজী আছি। যা চাইবে তাইই করতে পারবো কোন সমস্যা নাই।
রায়হানঃ হা, আছে ২/১ পরিচিত যারা এমন করেন কিন্তু তারা তোঁ অনেক বয়স্ক লোক। তুমি তোঁ বয়সে অনেক ছোট,জানো এইগুলা কিন্তু অনেক Risky হতে পারে। তুমি কেন বুঝতে চাইতেছ না??
অপূর্বঃ হোক Risky ! তাঁতে সমস্যা নাই। আর উনারা তোঁ তোমার পূর্ব পরিচিত, তোমার Refference এ গেলে ভয় কীসের। তুমি তাঁদেরকে বল আমি রাজী আছি, যেকোনো দিন,যেকোনো সময় আমি পারবো।
রায়হানঃ তোমার দিকে এখন আমার তাকাতেও ঘৃণা হচ্ছে। ছি ছি ছি... টাকার নেশায় তোমার এই বেহাল দশা। আমার কোন কথাই যখন শুনলে না... আচ্ছা ঠিক আছে তোমাকে আমি উনার নাম-ঠিকানা-ফোন নম্বর দিয়ে দিচ্ছি,তুমি উনার কাছে গেলেই হবে... আমি উনাকে ফোন করে বলে রাখব তোমার কথা... আর তোমার সাথে সম্ভবত এইটাই আমাদের শেষ দেখা ও শেষ কথা। দয়া করে, কোনদিনও তুমি আমার সাথে আর যোগাযোগ করবা না। ফোনও করবে না,কোনদিন।
অপূর্বঃ হা হা হা... বাহ তুমি তোঁ দেখি অনেক রাগ করতে পারো। আরে তোমার মত শহুরে স্মার্ট ছেলে চাইলেই আমার চেয়ে হাজারটা ভালো ছেলে যোগাড় করতে পারবে। সে যাই হোক... তোমাকে অনেক ধন্যবাদ আমাকে সাহায্য করার জন্য। তুমি ভালো থেকো, তোমার উপকারের কথা আমার সারাজীবন মনে থাকবে।
রায়হানঃ আজাইরা প্যাঁচাল বাদ দাও। তুমি থাকো, আমি গেলাম। তবে তোমার কথা আমার সারাজীবন মনে থাকবে, তোমাকে এতো সহজে বোধহয় ভুলতে পারবো না। বিশ্বাস করো আর নাই করো শুধুমাত্র তোমাকেই আমার এতোটা ভালো লেগেছিল, তাই হয়ত শতচেষ্টা করেও তোমাকে ভুলতে পারবো না । পারলে তুমি আমাকে ভুলে যেও। ভালো থেকো,অপূর্ব। আমি এখন আসি।
অপূর্বঃ আমার আর কিছুই বলার নাই । আর কিছু বলতেও চাই না । শুধু এইটুকুই বলতে পারি জানিনা হয়ত আজকে অনেক বড় কোন ভুল করতে চলেছি কিনা। যার মাশুল কোনদিনেও শোধ করতে পারবো না। মনে হচ্ছে কি এক অমূল্য সম্পদ হারাচ্ছি। তবে যাইহোক না কেন এটাকেই নিয়তি বলেই মেনে নেব। শেষ কথা, তোমাকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবো না। তুমি অনেক অনেক ভালো থেকো।



দৃশ্যঃ চার
২৫ অক্টোবর, শুক্রবার, সকাল ১১ টা
তখনও চিঠিটা হাঁতে নিয়েই দাঁড়িয়ে ছিল রায়হান। মনে মনে বলতে লাগলো এতক্ষণ আমি যেই অপূর্বর কথা ভাবলাম, চিঠিটা কি তাহলে সেই অপূর্বর?? ও কি তাহলে আত্মহত্যা করলো ?? ভয়ে ততক্ষনে রায়হানের হাত পা ঠাণ্ডা হবার উপক্রম হল। কাঁপা কাঁপা হাঁতে কোনোরকমে চিঠিটা খুলে রায়হান পড়তে শুরু করলো.....

প্রিয় রায়হান,
আমি অপূর্ব। তোমার সেই Lovely Bird অপূর্ব। চিঠিটা যখন তোমার হাঁতে পৌঁছাবে তখন হয়ত আমি আর এই পৃথিবীতে নেই। থাকবো কোন দূর অজানায়,সবার ধরাছোঁয়ার ঊর্ধ্বে। আমি সেইদিন তোমার ভালোবাসার প্রস্তাবে রাজী হইনি বলে তুমি আমাকে এমন শাস্তি দিবে সেটা আমি জীবনেও ভাবতে পারিনি। যাইহোক হয়ত আমাকে অতিরিক্ত ভালোবাসো বলে তার যোগ্য পুরস্কারটাই আমাকে দিয়েছ। তোমার দেয়া ঠিকানা মত আমি সেই ব্যক্তির সাথে একটা আবাসিক রেস্টুরেন্টে দেখা করতে গেলে তিনি আমাকে ঐ রেস্টুরেন্টের ১০ তলার কর্নারের একটা কক্ষে নিয়ে যান। রুমে প্রবেশ করে দেখি সেইখানে তার মত প্রায় চল্লিশ ঊর্ধ্ব বয়সী আরও ৩জন লোক বসে আছে। ওনারা বললেন তারা নাকি তোমার সাথে আমাকে নিয়ে ৩০০০ টাকার চুক্তি করেছে, যার ১৫০০ টাকা তোমার আর বাকী ১৫০০ টাকা আমার জন্য ছিল। যাইহোক অতপর যা করার তাই হল,আমি ভয়ে চিৎকার করা শুরু করলে প্রথমে স্কচ টেপ দিয়ে আমার মুখ বেঁধে জোরপূর্বক বিছানায় শোয়াল। তারপর আমার দেহটাকে নিয়ে চারজন মানুষরূপী পশু অদ্ভুত এক খেলায় মেতে উঠলো। আমার সারা শরীর কামড়াতে লাগলো। তোমার সাথে আমার জীবনের প্রথম যৌনসঙ্গম হয়েছিল,সেই সুখ যতটাই মধুর ছিল,আর এইখানে কিনা সেইটাই জীবন হন্তারক বলে মনে হচ্ছিলো। শেষমেশ চারজন পশু একেরপর একজন করে আমার উপর দিয়ে তাঁদের লালসার সাধ মিটাতে লাগলো। আমি তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করতে লাগে ওরা আমার হাতপা চেপে ধরে রাখে। সারারাত আমাকে অত্যাচার করে রক্তাক্ত অবস্থায় আমাকে ফেলে সকালে ওরা চলে যায়। এমনকি আমার মোবাইল মানিব্যাগও ওরা নিয়ে যায়। অবশেষে রেস্টুরেন্টের লোকেরা আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হসপিটালে রেখে যায়। আমার এই অবস্থার কথা হসপিটালে জানাজানি হয়ে গেলে চিড়িয়াখানায় জন্তু জানোয়ার দেখতে যেমন মানুষজন ভিড় করে ঠিক তেমনি আমাকেও দেখার জন্য মানুষের ভিড় লেগে যায়। টেলিভিশন রিপোর্টার,পত্রপত্রিকার সাংবাদিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা এসে আমার ছবি তুলে নিয়ে যায়,আমার মন্তব্য জানতে চায়। এভাবে প্রায় দুইদিন অসহ্য শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে হসপিটালের বেডে শুয়ে তোমাকে শেষ চিঠিটা লিখলাম। আর হসপিটালেরই একটা বয়কে দিয়ে চিঠিটা পোস্ট করলাম। ভালই যদি বেসেছিলে তাহলে এতটুকু সাহায্যের জন্য এত বড় উপকার কেন করলে?? আমিতো তোমার কাছে আমার জীবনের একটা বড় সমস্যার ছোট একটা সমাধান চাইছিলাম মাত্র। আমি না হয় তোমার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলাম কিন্তু একটা বন্ধু হিসাবে তোঁ তুমি আমাকে একটু সাহায্য করতে পারতে, কিন্তু তাই বলে তুমি প্রতিশোধ নিলে? যাইহোক আমি তোমাকে কোন দোষ বা অভিশাপ দিচ্ছি না। তুমি আসলেই অনেক ভালো, আর তুমি যে আমাকে আসলেই অনেক ভালোবাসো সেইটাও আমি বুঝেছিলাম। হয়ত আমিই প্রকৃত ভালোবাসা খুঁজে নিতে পারিনি যার ফলে আজ আমার এই অবস্থা। তুমি ভালো থেকো,আমার কথা একটু হলেও মনে রেখো,একেবারেই ভুলে যেও না।
ইতি তোমারই
Lovely Bird অপূর্ব

দৃশ্যঃ পাঁচ
রাত প্রায় সাড়ে তিনটা.........
অন্ধকার রুম। আচমকা ঘুম ভেঙ্গে উঠে বিছানায় বসে পড়লো রায়হান। ঘামে সারা শরীর ভিজে একাকার। ভয়ে বুকের হৃদ স্পন্দন ধকধক করে বাজতেছে,মনে হচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে ১০০টা করে হার্টবিট উঠানামা করতেছে। ভাবতেছে এতক্ষণ যা দেখলাম এগুলো কি সত্য নাকি দুঃস্বপ্ন ?? কীসের চিঠি,কোন হসপিটাল,কীসের আত্মহত্যা,কেন করলো,কে করলো, এর মধ্যে অপূর্বই বা কেন আসলো ?? এমন হাজারটা প্রশ্ন ভিড় করলো তাঁদের মনের মধ্যে। নিজেই নিজের গাঁয়ে চিমটি কাটল সে কি কোন ঘোরের মধ্যে আছে নাকি বাস্তবেই নিজের বিছানায় আছে,ভাবল আমি এসব কি বাজে দুঃস্বপ্ন দেখলাম? কেন দেখলাম?? আমি আমার ভালোবাসার অপূর্বকে নিয়ে এসব উল্টাপাল্টা কি স্বপ্ন দেখলাম। হায় আল্লাহ আমিতো আমার জীবনের চেয়েও অপূর্ব কে বেশি ভালোবাসি,ওকে আমি কোনোদিনও কোন কষ্ট দেই নাই তাহলে ওকে নিয়ে আমাকে এতোটা খারাপ দুঃস্বপ্ন কেন দেখালে? কিছুতে নিজেই বিশ্বাস করতে পারতেছিল না,সে অপূর্বকে নিয়ে এমন দুঃস্বপ্ন দেখতে পারে। তৎক্ষণাতই রায়হান অপূর্বকে ফোন দিলো.. প্রায় ৩/৪ বার রিং বাজার পর অপূর্ব ফোন রিসিভ করলো....
অপূর্বঃ হ্যালো!! কি হল এতো রাতে তোমার আবার উত্তেজনা জাইগা উঠলো নাকি, আমি কিন্তু এতো রাতে কিছু করতে আসতে পারবোনা। ... (ঘুম কাতুরে কণ্ঠে)
রায়হানঃ ধুর... ফাজলামো কইরো না। এতবার রিং বাজে ফোন ধরনা কেন ?? তুমি ঠিক আছো তোঁ?? শরীর ঠিক আছে?? তোমার আম্মা কেমন আছেন?? সত্যি করে বলতো তোমার কোন বিপদ হয়েছে কিনা?? আচ্ছা আমার উপর কোন কারণে তোমার কি কোন প্রকার ক্ষোভ আছে ?? অথবা আমি কি তোমার সাথে কোন বিষয় নিয়ে প্রতারনা করেছি?

অপূর্বঃ হা হা হা... এতো রাতে তোমার মাথায় কি ভূত ভর করলো নাকি? কীসব পাগলের মত কথা বলতেছ। কীসের ক্ষোভ, প্রতারণা। তুমি কি জেগে জেগে স্বপ্ন দেখছিলা নাকি?
রায়হানঃ সত্যি ই নাই তোঁ?? আগে তাই বল??

অপূর্বঃ আরে বোকা, না না না। তুমি নিশ্চয় আমাকে নিয়ে বাজে দুঃস্বপ্ন দেখেছ তাই না?? আরে স্বপ্ন স্বপ্নই হয় এটা কখনো সত্য হয় না, এগুলো শুধুশুধু মানুষ কে কিছুটা ভাবায়... বুঝলা... এসব চিন্তা করে নিজেকে কষ্ট দিও না।

রায়হানঃ হম... অনেক বাজে স্বপ্ন... যেটা তোমাকে আমার থেকেও বহুদূর নিয়ে যাচ্ছিলো। আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না,যে তুমি আমার সাথে কথা বলছ, মনে হচ্ছে আমি এখনও সেই অভিশপ্ত দুঃস্বপ্নের মধ্যেই আছি। আসলে আজকের এই রাতটা আমার জীবনের সবচেয়ে কালো রাত। আমি আসলে তোমাকে কখনই হারাতে চাই না। । আমার মৃত্যুর পরে যেন তোমার মৃত্যু হয়, আমি যেন আমার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তোমাকে দেখতে পারি। সত্যিই বলতো তুমিই কি আসলেই আমার সাথে কথা বলতেছ কিনা?? আমি এখনও নিজেকে বিশ্বাস করতে পারতাছি না।

অপূর্বঃ ১০০ বার সত্যি,২০০ বার সত্যি। আসলে তুমি আমাকে নিয়ে এতটাই বেশি ভাবো যে সারাদিন আমার চিন্তাই শুধু তোমার মাথায় ঘুরপাক খায় তাই এমন হয়েছে মনে হয়। আচ্ছা বল কি করলে বিশ্বাস করবা যে আমিই তোমার সাথে কথা বলতেছি।

রায়হানঃ তাহলে ১০বার চিৎকার করে বল ভালোবাসি ভালোবাসি।
অপূর্বঃ হা হা হা...ঠিক আছে... বলতাছি... ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ... হয়েছে তোঁ......। আর কি করতে হবে বল......?
রায়হানঃ এইবার তোমার ঐ মিষ্টি ঠোঁট দিয়ে আমাকে ১০০ টা চুমু দাও...
অপূর্বঃ ফাজিল কোথাকার... যাও দিচ্ছি... চুম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম. ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম ম আ আ আ আ আ আ আ......... ............ আ আ আ আ......আ আ আ... হইছে নাকি আরও লাগবে... ??

রায়হানঃ হা হা হা... চুম ম ম ম আ আ আ... হইছে। বাকী টুকু পরে করবো কিন্তু............
অপূর্বঃ হি হি হি... তুমি আসলেই শয়তান, ভালো আর হইলা না।
বন্ধুরা আসেন আমরা সবাই আমাদের দুই কান চেপে ধরি, রায়হান আর অপূর্বর গোপন ফোনালাপ না শুনি। ওদেরকে একটু একান্তে নিরিবিলিতে প্রেম করতে দেই, ভালবাসতে দেই। দুঃস্বপ্ন ভুলে একটু সুখস্বপ্নে ভাসতে দেই। আসলেই ভালোবাসার শক্তি অনেক প্রখর। দুইজনের মধ্যে যদি আত্মিক সম্পর্ক অটুট থাকে তবে অন্ধকার রাত,ভয়ংকর কুয়াশা,অভিশপ্ত দুঃস্বপ্ন কোন কিছুই এটার ন্যূনতম বিচ্যুতিও ঘটাতে পারে না। ভালোবাসার জয় জয়কার সবসময়ই সর্বত্রই ঘটে থাকে। অতঃপর একটা ভয়ংকর ও অভিশপ্ত দুঃস্বপ্নের মৃত্যু ঘটলো এবং ভালোবাসার পবিত্র পদ্ম প্রস্ফুটিত হল।

কোন মন্তব্য নেই:

আমাদেরও কিছু গল্প আছে। শোনার মত মানসিকতা কি আছে তোমার?

আমাদেরও কিছু গল্প আছে। শোনার মত মানসিকতা কি আছে তোমার?