২৭ মে, ২০১৪

সংশয় লেখকঃ আমার আমি (হাসান মাসুদ)

১.
শেষ বিকেলের সূর্যটা যখন অস্তমিত প্রায়, দিগন্তজুড়ে রাঙা আভা বিরাজমান; ঠিক ঐ সময়টাতে ছাদে ধীরলয়ে এলোপাতাড়ি হাঁটতে হাঁটতে মোবাইলে কথা বলা আরিফের অনেক দিনের অভ্যাস। আজও সেভাবেই কথা বলছে বেশি খানিকক্ষণ ধরে। আজকাল তো তার কথা বলার একজনই মানুষ, আর সেই মানুষটি হলো তার ভালবাসার মানুষ আকাশ। আকাশের সাথে সম্পর্কটা দেখতে দেখতে আজ দু'বছর হয়ে গেল। একটি প্রতিষ্ঠিত মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে চাকুরীরত আকাশ। প্রতিদিনই শেষ বিকেলের এই সময়টাতে একটু বেশি সময় ধরে আরিফের সাথে কথা বলা তারও অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। আজও তার ব্যতিক্রম হয় নাই। প্রতিদিন এত কথা বলে তারপরও মনে হয় যেন আরো কথা বলতে পারতো! এত কথা কি যে বলে ভেবে কূল পায় না, যতই দিন যাচ্ছে তাদের মধ্যে ভালবাসার বন্ধনটা ততই দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হচ্ছে! অন্যান্য দিন আকাশ ফোনে আবেগমাখা বিভিন্ন শব্দ বেবি, সোনা
-মনি, ডার্লিং এসব বলে কথা শুরু করে। আজ আরিফ যখন ফোন রিসিভ করল, ওপাশ থেকে একটু গম্ভীর গলায় ভেসে আসল, 'আরিফ, তোমার সাথে আজ সিরিয়াস কিছু কথা বলব, আশাকরি মনোযোগ দিয়ে শুনবে।' আরিফ কিছুক্ষণের জন্য থমকে দাঁড়িয়ে ছিল, মনে মনে ভাবতে লাগল, এতদিনের মধ্যে কোনদিনই তো এভাবে কথা শুরু করে নাই, আজ কি এমন সিরিয়াস কথা বলবে কিছুই তো মাথায় আসছে না। কানে ফোন নিয়ে চুপচাপ দাঁড়ানো। ওপাশ থেকে আবার গম্ভীর কন্ঠস্বর, 'আরিফ চুপ কেন, আমার কথাগুলো কি শুনতে পেরেছে? আমি কি কথা শুরু করব?' 'হ্যাঁ, কর' বলে সংক্ষিপ্ত জবাব দিল আরিফ। ওপাশ থেকে কাঁপা কাঁপা গলায় আকাশ বলতে লাগল, 'দেখ আরিফ, আমি তোমাকে কতটুকু ভালবাসি সেটা আমি জানি না, আমি সেটার পরিমাপ করতে পারব না। তবে তুমি যে আমাকে কতটুকু ভালবাস, সেটা আমি জানি। তোমার ভালবাসারও পরিমাপ আমি করতে পারব না, কারণ তোমার ভালবাসা পরিমাপের মত কোন স্কেল আছে বলে আমার জানা নাই! আমি এও বিশ্বাস করি, তোমার ভালবাসায় বিন্দুমাত্রও অবিশ্বাস, ছলনা নাই; তুমি আমাকে মন
-প্রাণ উজাড় করে ভালবেসেছ, এখনও ভালবেসে যাচ্ছ। আর আমি তোমার ভালবাসার মর্যাদা রক্ষার চেষ্টা করেছি, নিজে থেকে তোমাকে বেশি ভালবাসতে পারি নাই। তুমি এতটাই ভালবেসেছ যে সেটার মর্যাদাও অনেক সময় আমার দ্বারা রক্ষা হয় নাই। তোমার ভালবাসা পেয়ে নিজেকে আমি সত্যিই অনেক বড় মনে করছি। আমি গর্বিত যে আমাকে কেউ একজন এমনভাবে ভালবাসে, যে ভালবাসার পরিপূর্ণ মর্যাদা রক্ষা করার যোগ্যতাও আমার নাই। আমি সত্যিই একজন ভাগ্যবান তোমার মত একজন ভালবাসার মানুষ পেয়েছি।' এক নিঃশ্বাসে এই কথাগুলো বলে একটু থেমে জিজ্ঞেস করল, 'আরিফ, শুনতে পাচ্ছ তো?' 'হ্যাঁ, বলে যাও শুনছি খুবই মনোযোগ দিয়ে' এবারও সংক্ষিপ্ত জবাব দিল আরিফ। আকাশ আবার শুরু করল, 'আরিফ দেখ, কিছু কিছু নিয়তি সবসময়ই মেনে নিতে হয়, যদিও মানাটা অনেক সময়ই হয় কষ্টের, যন্ত্রনার! কিন্তু তারপরও কিছুই করার থাকে না, মানুষ হিসাবে আমরা অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে আটকে আছি। সমাজ, সংস্কার, ধর্ম, মানবিকতা, মূল্যবোধ, নৈতিকতা ইত্যাদি অনেক কিছুরই বেড়াজালে আবদ্ধ আমাদের জীবন। এসব সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমাদের এগিয়ে যেতে হয় কাঙিত স্বপ্ন পূরণের দুর্ভেদ্য লক্ষ্যে; যদিও বেশিরভাগই লক্ষভেদ না হয়ে লক্ষ্যচ্যুতই হয়! এখন যে কথাগুলো বলব, একটু শান্ত হয়ে শুনবে। আমি জানি তুমি অনেক শান্ত, ধীরস্থির স্বভাবের ছেলে; খুব মনোযোগ দিয়ে শুনবে কিন্তু।' আরিফ স্বগতোক্তির মত বলল, 'বল, শুনতে পাচ্ছি।' 'আমার পরিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমার বিয়ে দিবে! মা
-বাবা ছেলের বউ দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। নিজের মনের সাথে অনেক যুদ্ধ করেছি, কয়েকবারই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার মনের সব কথা সবাইকে বলে দিব; পরে যা হওয়ার হবে। কিন্তু আমি ভীরু, আমি দুর্বল, আমি কাপুরুষ সেই কথাগুলো বলার সৎসাহস যে আমার নাই, সমাজ
- সংস্কারের বিপরীতে গিয়ে যে কথাগুলো বলব সেই সৎসাহসটুকু আমি দেখাতে পারি নাই। কাপুরুষের মত পরাজয় বরণ করেছি, নিজেকে সঁপে দিয়েছি সমাজ
-সংসারের চিরায়ত নিয়মের মধ্যে! আমি পারি নাই আমার আমিত্বকে প্রকাশ করতে, আমার ভালবাসার মর্যাদা দিতে, আমার ভাললাগাকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে! আমি হেরে গেছি নিজের কাছে, আমার নিজের ভীরুতার কাছে আমাকে সঁপে দিয়েছি! তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও।' কান্নায় কন্ঠরুদ্ধ হয়ে আসায় আর কিছুই বলতে পারল না। প্রতিটি কথা শুনছিল, আর মনে হচ্ছিল একেকটা শেল বুকে বিঁধছে আরিফের। অশ্রু সংবরণ কোনক্রমেই করতে পারল না, দু'চোখের কোল বেয়ে অঝর ধারায় অশ্রু গড়াতে লাগল। বোবা কান্নায় কিছুই বলতে পারছিল না। শেষমেষ অনেক কষ্টে নিজেকে কঠিন করে ছোট্ট উত্তরে বলল, 'আমার ভালবাসা তোমার সাথে আছে, আমার ভালবাসার শক্তি তোমার সাথে। তুমি যেভাবে চাও সেটাকে সেভাবেই কাজে লাগাও, তোমার ভাল তুমিই বুঝ। তোমার পরিবারের সাথে মিলেমিশে নিজের জীবনের পরবর্তী সন্ধিক্ষণের সঠিক সিদ্ধান্ত নাও।' এটুকু বলে আর কিছুই বলতে পারল না। ফোনটা আস্তে করে কেটে দিল। পশ্চিমাকাশে সূর্য তখন ডুবন্ত প্রায়, শেষ আলোকরশ্মি টুকু ডুবে যাওয়ার পথে; সেই দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আরিফ ভাবতে লাগল, হায়! তেজদ্বীপ্ত সূর্য যেমন সারাদিন আলো বিকিরণ করে অস্তমিত হচ্ছে, আমার ভালবাসাটাও তেমনি ভালবাসার আলো ছড়িয়ে আজ অস্তমিত হতে যাচ্ছে। এরই নাম নিয়তি, এরই নাম বুঝি নিয়তির কাছে নিজেকে সঁপে দেওয়া। এসব কথা যখন ভাবছিল ঠিক তখন মোবাইলে রিংটোন বেজে উঠল। আরিফ নিশ্চিত যে আকাশ আবার ফোন দিয়েছে, আর আকাশের ফোন রিসিভ করার মত মানসিক পরিস্থিতি আর নাই। তাই রিংটোন বাজতেই থাকল। কিন্তু না একবার নয়, দু'বার নয়, টানা তিনবার যখন বাজল তখন মোবাইল স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখতে পেল আরে এ যে বন্ধু আকিবের নম্বর! তাড়াতাড়ি রিসিভ করল
-
- হ্যালো
- কেমন আছিস রে?
- ভাল, তুই?
- ভাল রে.... অনেক ভাল।
- হুম
- কি রে তোর মন খারাপ? কি হয়েছে?
- না, তেমন কিছুই না। তারপর বল কেমন যাচ্ছে....

২.
আরিফ আর আকিব বাল্যবন্ধু। স্কুল
-কলেজ একসাথেই পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আরিফ ঢাকাতেই একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে, আর বড়লোক বাবার মেধাবী সন্তান আকিব পশ্চিমা একটা দেশে সেখানকার নামী
-দামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে! খুব ঘন ঘন যোগাযোগ তাদের মধ্যে না হলেও মোটামুটি কিছুদিন বিরতিতে হলেও একটা যোগাযোগ রয়েছে। প্রায়ই দু'জনের মধ্যে ফোনে কথা হয়, মাঝে মাঝে ফেসবুকে চ্যাটও হয়, কিন্তু সব আলাপ
-আলোচনাই ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতিচারণ আর নিজেদের পড়ালেখার বিষয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। একই এলাকায় পাশাপাশি রোডে বসবাস সেই ছোট্টবেলা থেকেই। দু'জনের পরিবারের মধ্যে ভাল সম্পর্কের জন্য ছিল অবাধ যাতায়াত। সারাক্ষণ একজন আরেকজনের সাথে আঠার মত লেগেই থাকত! একসাথে স্কুলে
- কলেজে যাওয়া, একই কোচিং বা শিক্ষকের কাছে পড়া, প্রায়ই একজন আরেকজনের বাসায় রাত কাটানো, একসাথে সিনেমা দেখা, দুষ্টুমি করা সব মিলে অন্য আর দশটি ভাল বন্ধু জুটির মতই ছিল ওদের সম্পর্ক! তখন ওরা সবেমাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছে। শরীরতত্ত্ব সম্পর্কে কিছু কিছু জ্ঞান আহরিত হয়েছে। নিজেদের শরীরের অজানা রহস্য নিয়ে যেমন দু'জনের মধ্যে কিছু আলাপ
-আলোচনা হয়, তেমনি রহস্যের আঁধার নারী দেহের গুপ্ত বিষয়গুলো নিয়েও ভাসা ভাসা কিছু আলোচনা নিজেদের মধ্যে প্রায়ই হয়। এভাবেই গল্প, আড্ডা, দুষ্টুমির ছলে কোন একদিন একজন আরেজনের শরীর নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করে দেয়! সেই ধারাবাহিকতায় মাঝে
-মধ্যেই একজনস আরেকজনের শরীর নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে! তবে হ্যাঁ, এই ঘাঁটাঘাঁটি পর্যন্তই ওদের কার্যকলাপ সীমিত! সত্যি বলতে কি, দু'জন ছেলের মধ্যেও যে শরীরবৃত্তিয় কোন কার্যকলাপ বা শারীরিক সম্পর্ক হতে পারে এটা ওদের ধারণায়ই ছিল না। সঙ্গতকারণেই ওদের মধ্যে সেই অনুভূতি কখনোও কাজ করে নাই, শুধুমাত্র দুষ্টুমির ছলেই ওরা এতটুকু করে। একদিনের কথা। সামনে পরীক্ষা ছিল, তাই দু'জনে মিলে রাত জেগে পড়ার জন্য আরিফদের বাসায় থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। রাতে ঘুমুতে যাবার সময় ওরা সেই ঘাঁটাঘাঁটির কাজ শুরু করল! খুব ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে আরিফ আকিবকে বলছিল, 'এই আকিব, শোন আমার মাঝে মধ্যে কি মনে হয় জানিস? তুই বা আমি যে কেউ যদি মেয়ে হতাম তবে কতই না ভাল হতো! আমরা একজন আরেকজনের সাথে প্রেম করতাম! তোকে কত যে ভালবাসতাম, সেটা তুই চিন্তাও করতে পারতি না!' আকিবের সহাস্য উত্তর, 'তোর মাথায় যত আজগুবি চিন্তা, আমাদের কেউ মেয়ে হলে কি এভাবে রাতে একবাসায় একসাথে কখনও থাকতাম?' 'তা তুই ঠিকই বলেছিস, আচ্ছা আকিব আমরা কি একজন আরেকজনকে ভালবাসতে পারি না?' আরিফের এমন প্রশ্নে আকিব জোরে হেসে উঠল। বলল, 'তুই যে কি চিন্তা করিস না? এগুলো কিভাবে সম্ভব, একটা ছেলে আরেকটা ছেলেকে ভালবাসবে কিভাবে? আর কিই বা হবে ভালবেসে? ছেলে
-ছেলে কি কখনও বিয়ে হবে? যত্তসব উদ্ভট চিন্তা তোর মাথায়!' 'বিয়েটাই কি সব রে, আসলে মনের ভাললাগাটাই আসল' আরিফ ছোট্ট করে জবাব দিল। 'ঠিক আছে, এখন ঘুমো। কাল তো পরীক্ষা' বলে আকিব পাশ ফিরে শুয়ে পড়ল! আরো কিছুক্ষণ আরিফ এটা নিয়ে ভাবতে লাগল, আসলেই কি দু'জন ছেলের মধ্যে ভালবাসা হতে পারে না? শারীরিক সম্পর্কটাই কি মূখ্য? মনের প্রশান্তিরও তো একটা ব্যাপার আছে! এসব বিষয় নিয়ে কি আরো কেউ ভাবে? এসব ভাবতে ভাবতে সেও ঘুমিয়ে পড়ল। এভাবেই দু'জনের কলেজ লাইফ শেষ হয়ে গেল। এইচ.এস.সি পাশের পর দু'জনই ভর্তি প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। একপর্যায়ে আরিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলো আর আকিব ভিনদেশে পাড়ি জমাল।

৩.
- আমার খুবই ভাল যাচ্ছে। মনটা অনেক খুশি। তোর সাথে আজ কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলব। আমি জানি এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বললে তুই খুব্বি খুশি হবি!
- বল, যা বলার..
- তোর কি মনে আছে? আমরা যখন একসাথে ঘুমাতাম বা অন্য সময় প্রায়ই আমরা দুষ্টুমি করতাম..
- সেসব তো পুরোনো কথা এসব কথা কি কেউ ভুলতে পারে? তা হঠাৎ এসব কথা কেন?
- হুম, সেটাই তো বলছি। তুই তো প্রায়ই একটা কথা বলতি, যে আমরা একজনকে আরেকজনকে ভালবাসতে পারি না? আর আমি সেগুলোকে তখন উদ্ভট কথা বলে হেসে উড়িয়ে দিতাম..
- হা, তুই তো তাই করতি..
- আসলে সত্যি কথা বলতে কি, এসব যে সত্যি সত্যিই হতে পারে, সেটা তখন আমি কল্পনাও করতে পারি নাই! এদেশে এসে আমি এসব বিষয়ে সব জেনেছি। আমার অনেক সহপাঠী এমনকি কয়েকজন টিচারও ছেলেদেরকে ভালবাসে! আমিও অনেকের কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েছি ......
- হা ভাল তো, তোকে দেখলে তো যে কেউই পাগল হয়ে যাবে। তা তুই কারো প্রোপোজ একসেপ্ট করিস নাই?
- দুর কি যে বলিস না তুই, আমি যখন সব বিষয় জানলাম, সব বুঝলাম তখন মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম আমিও একটা ছেলেকে ভালবাসব, অনেক অনেক ভালবাসব, তার সাথে সারাজীবন থাকার পরিকল্পনা নিয়েই ভালবাসব.....
- ভালই তো! কাউকে কি ভাল লাগে নাই? কাউকে ভালবেসে ফেল..
- তুই জানিস না, আমি যাকেই ভালবাসার দৃষ্টিতে ভাবতে যাই, যাকেই দেখি তার মধ্যেই যে তোকে দেখতে পাই, সবার চেহারাতেই তোর চেহারাটা ভেসে উঠে! আমার সমস্ত অস্তিত্ব জুড়েই যে তুই আছিস!
- ঢং, তখন তো আমার কথা হেসে উড়িয়ে দিতি.
- তখন দিতাম বুঝতাম না বলে, এখন তো সব কিছু বুঝেছি, আমি তোকে খুব ভালবাসি রে.. কিছুদিন ধরেই ভাবছিলাম তোকে সব কিছু খুলে বলব, কিন্তু সময় করে উঠতে পারছিলাম না। আজ আমি সবকিছুই তোকে বললাম, তোর মধ্যেই যে আমি আমার অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছি! তোকে যে আমি ভালবেসে ফেলেছি। আরিফ তুই আমাকে ভালবাসবি না?
- জানি না.
- তুই কি বলছিস? তুই এটা বলতে পারলি? তুই না আমাকে ভালবাসার কথা বলতি? এখন তুই বলছিস তুই জানিস না? তোর জানার দরকার নাই? আমি তোকে ভালবাসি, ভালবাসি এটাই সত্যি। আর হ্যাঁ, তোকে বলে রাখি সামনের ছুটিতে আমি দেশে আসছি! তুই হবি আমার, তোকে নিয়ে কত জায়গায় বেড়াব, তোকে কত ভালবাসব ...
- আচ্ছা, দেখা যাক এখন রাখি (আরিফের কন্ঠ বাষ্পরুদ্ধ হয়ে এল)
- ঠিক আছে ভাল থাকিস... আরিফের চোখ বেয়ে অঝোরে অশ্রু পড়ছে! কেন পড়ছে কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। এটা কি আকাশের সাথে দু'বছরের ভালবাসা হারানোর ভয়ে না আকিবের অনেকেদিনের জমানো ভালবাসা পেয়ে? কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না, পুরোপুরি সংশয়ে আছে, কোনটাকে সে প্রাধান্য দিবে? ভাবতে ভাবতে সিঁড়ি ভাঙতে থাকে....

কোন মন্তব্য নেই:

আমাদেরও কিছু গল্প আছে। শোনার মত মানসিকতা কি আছে তোমার?

আমাদেরও কিছু গল্প আছে। শোনার মত মানসিকতা কি আছে তোমার?