০৩ মার্চ, ২০১৪

সমকামী বিয়ে বৈধ যেসব দেশে

ঘর বাঁধার স্বপ্ন কি শুধু একটা ছেলে আর একটা মেয়েই দেখতে পারে ?
সমমনা দুজন পুরুষ বা নারী কি ভালবেসে একে অপরকে বিয়ে করতে পারে না ?
সমকামী বিয়ে ! এও কি সম্ভব !
অনেকের মাঝেই এই প্রশ্নগুলো মাথা চাড়া দেয় ।

উত্তর অনেকেই কিছুটা জানি । আবার কিছুটা অস্পষ্ট । বেশ একটা সন্দেহ কাজ করে সমকামী বিয়ে নিয়ে ।
কেউ কেউ আবার মনে মনে ভেবে বেড়ান সমকামী হয়েছ ভালো কথা ! তা বিয়ের আবার কি দরকার ! লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম আর সেক্স করলেই তো হয় ! তবে এতো কিছুর পরও পশ্চিমা বিশ্বের বেশ কিছু দেশে এর মাঝেই স্বীকৃতি পেয়েছে সমকামী বিয়ে । সর্বশেষ তথ্য অনুসারে বর্তমান বিশ্বের মোট সতেরোটি দেশে সমকামী বিয়ে স্বীকৃতি পেয়েছে ।
দেশগুলো হল নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, স্পেন, কানাডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, নরওয়ে, সুইডেন, পর্তুগাল, আইসল্যান্ড, আর্জেন্টিনা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, ব্রাজিল, উরুগুয়ে, নিউজিল্যান্ড ,ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ড । 
এছাড়া মেক্সিকো এবং যুক্তরাষ্ট্র এর কিছু কিছু অংশে সমকামী বিয়ের স্বাধীনতার স্বীকৃতি প্রদান এখনও আইনের মাধ্যমে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে । 

নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডসই সর্বপ্রথম দেশ যারা ২০০১ সালে সমকামী বিয়েকে আইনগত ভাবে স্বীকৃতি দেয় । দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ১,৬৮,১৯,৫৯৫ এবং আয়তন ৪১,৫৪৩ বর্গ কিলোমিটার।দেশটিতে সমকামী বিয়ে বৈধ করার জন্য আন্দোলন শুরু হয় আশির দশকের মাঝামাঝিতে যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন হেঙ্ক ক্রল । আয়তনের এই দেশের পার্লামেন্টে ২০০১ সালে ১০৭-৩৩ ভোটে সমকামী বিয়ের আইন পাশ হয় । তবে ঐ পাশ করা আইনের একটি শর্ত ছিল । আর তা হল নেদারল্যান্ডে কোন সমকামী জুটিকে বিয়ে করতে হলে ঐ জুটির অন্তত একজন জাতিগতভাবে ডাচ বা নেদারল্যান্ড এর নাগরিক হতে হবে । 



বেলজিয়াম
উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের একটি দেশ বেলজিয়াম হল দ্বিতীয় দেশ যারা সমকামী বিয়েকে আইনগতভাবে স্বীকৃতি দেয় । দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ১,০৪,১৪,৩৩৬ এবং আয়তন ৩০,৫২৮ বর্গকিলোমিটার । ২০০৩ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারী কিং আলবার্ট (দ্বিতীয়) সমকামী বিয়ের অনুমোদনকারী বিলে স্বাক্ষর করেন । তবে এই বিল অনুযায়ী সমকামী গে বা লেসবিয়ান জুটিরা বিয়ের পর কোন বাচ্চা দত্তক নিতে পারবে না । দেশটির কোন সমকামী জুটি যদি বাচ্চা দত্তক নিতে চায় তাহলে অন্য কোন স্বামী-স্ত্রী দম্পতির সাথে যুগ্মভাবে বাচ্চা দত্তক নিতে হবে । 

স্পেন
সমকামী বিয়ে স্বীকৃতি প্রদানের তৃতীয় দেশ হল স্পেন । দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ৪০,৬১,২৭৪ এবং আয়তন ৫,০৬,০৩০ বর্গকিমি। ২০০৪ সালে স্প্যানিশ সমাজতান্ত্রিক পার্টির অপ্রত্যাশিত বিজয় পর নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, Jose Luis Rodriguez Zapatero , দেশে সমকামী বিয়ের উপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল সেটি সরিয়ে দেন । যদিও সে দেশের ক্যাথলিক চার্চ এই সিধান্তের ঘোর বিরোধীতা করে । স্পেনের সংসদে সমকামী বিয়ের পক্ষে ১৮৭ ভোটের মাঝে ১৪৭ ভোট পেয়ে এই আইনটি পাশ হয় । আইনে বলা হয় সমকামী বিয়ে করতে হলে অন্তত একজনকে স্প্যানিশ নাগরিক হতে হবে অথবা স্পেনে বৈধ বসবাসের অনুমতি থাকতে হবে । 

কানাডা
উত্তর আমেরিকার কানাডা হল চতুর্থ দেশ যারা সমকামী বিয়েকে আইনত স্বীকৃতি দিয়েছে । দেশটির আয়তন ৯৯,৮৪,৬৭০ বর্গকিমি এবং জনসংখ্যা ৩,৫১,৩৩,৭০০ । ২০০৫ সালের ২৮ জুন, কানাডার হাউজ অব কমনস ‘সিভিল মেরেজ আইন’ পাশ করে যা ১৯ জুলাই সিনেট এ পাশ হয় । এরপর এটি চূড়ান্তভাবে ২০ জুলাই gender-neutral definition of marriage হিসেবে কানাডার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি অংশ জুড়ে স্বীকৃতি পায় । এই আইন অনুযায়ী যেসব নাগরিক ইউএসএ থেকে কানাডায় ভ্রমন করতে আসে তারাও চাইলে সমকামী বিয়ে সম্পন্ন করতে পারবে ।

সাউথ আফ্রিকা
আফ্রিকার দেশগুলোর মাঝে প্রথম সমকামী বিয়ে অনুমোদন দেয় সাউথ আফ্রিকা । আর বিশ্ব ব্যাপী সমকামী বিয়ে অনুমোদন কারী দেশ হিসেবে এর স্থান হল পঞ্চম অবস্থানে । আফ্রিকার দক্ষিণে অবস্থিত দেশটির আয়তন ১২,২১,০৩৭ বর্গকিমি এবং জনসংখ্যা ৪,৯৩,২০,০০০। দেশটির Constitutional Court ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে এই মর্মে রুল জারি করে যে সমকামী বিয়েকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা সে দেশের আইনের পরিপন্থী । ২০০৬ সালের ১৪ই নভেম্বর সে দেশের পার্লামেন্টে ২৩০-৪১ ভোটে সমকামী বিয়েকে আইন গত ভাবে অনুমোদন দেয়া হয় ।

কোন মন্তব্য নেই:

আমাদেরও কিছু গল্প আছে। শোনার মত মানসিকতা কি আছে তোমার?

আমাদেরও কিছু গল্প আছে। শোনার মত মানসিকতা কি আছে তোমার?